ঝাড়ফুঁকের পরে সর্পদষ্ট বালকের মৃত্যু

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রথমে ছেলেটিকে নিয়ে যাওয়া হয় নদিয়ার মাজদিয়া এলাকার এক ওঝার বাড়িতে। সেখানে ঘণ্টা দুয়েক ধরে ঝাড়ফুঁক চলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি

একের পর এক ঘটনা। তবু হুঁশ ফেরে না। সাপে ছোবল দেওয়ার পরে ওঝার কাছে ঝাড়ফুঁক করানোর পরে মৃত্যু হল এক বালকের। পূর্বস্থলীর মধ্য শ্রীরামপুরে এই ঘটনার পরে ছেলেটির পরিবারের আক্ষেপ, গোড়াতেই হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয়তো বাঁচানো যেত তাকে।

Advertisement

অভি সর্দার (৯) নামে ওই বালক স্থানীয় রমেশচন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টিন ও টালির চাল দেওয়া বাড়িতে থাকত অভি। বাড়ির আশপাশে রয়েছে খেত ও জঙ্গল। রবিবার রাতে ঘরের মেঝেতে শুয়ে ছিল সে। বাবা-মা ছিল বাড়ির বারান্দায়। গভীর রাতে একটি সাপে কাটে অভিকে। তার চিৎকারে বাড়ির লোকজনের ঘুম ভেঙে যায়।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রথমে ছেলেটিকে নিয়ে যাওয়া হয় নদিয়ার মাজদিয়া এলাকার এক ওঝার বাড়িতে। সেখানে ঘণ্টা দুয়েক ধরে ঝাড়ফুঁক চলে। সোমবার ভোরে ওঝার বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হয় অভিকে। কিন্তু সকালে কিছু খাওয়ার পরেই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন তাকে প্রতাপনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালের পথেই তার মৃত্যু হয়।

Advertisement

অভির বাবা নিরেন সর্দার দাবি করেন, ‘‘এর আগে এলাকার একটি ছেলেকে সাপে কেটেছিল। ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ার পরে সুস্থ হয়ে গিয়েছিল। তাই ছেলেকে প্রথমে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। কত বড় ভুল করেছি বুঝতে পারছি।’’ ছেলের মৃত্যুর পরে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার মতো ভুল যেন আর কেউ না করেন।’’

কালনা মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘সাপ ছোবল দেওয়ার পরে প্রথম ঘণ্টা দুয়েক খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ওই পরিবার ভুল করেছে।’’ চিকিৎসকেরা জানান, অনেক সময়ে বিষহীন সাপ ছোবল দিলে ওঝারা ঝাড়ফুঁক করে বাঁচানোর কৃতিত্ব দাবি করেন। তাতেই অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হয়।

বিজ্ঞানমঞ্চের কালনা শাখার সদস্য তথা শিক্ষক তাপসকুমার কার্ফা বলেন, ‘‘আমরা নানা জায়গায় সভা করে সাপে কাটলেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলি। কিন্তু মুষ্টিমেয় মানুষ সচেতন হচ্ছেন। স্কুলের পাঠ্যক্রমে বিষয়টি আনা হলে হয়তো সচেতনতা আরও বাড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন