রেলপাড়ে তোলা নিজস্ব চিত্র।
সেতু দু’টির বয়স এক শতাব্দীরও বেশি। কিন্তু দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ার ফলে কোথাও লোহার বিম ক্ষয়ে গিয়েছে। কোথাও বা দু’পাশে রেলিংয়ের দেখা নেই। এমনই হাল আসানসোল রেলপাড়ের সিদ্দিক সেতু ও লোহাপুলের। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভার কাছে সংস্কারের আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি।
আসানসোলের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে গাড়ুই নদী। দু’প্রান্তের সংযোগের জন্য রয়েছে একাধিক সেতু। রেলপাড়ের পাঁচটি ওয়ার্ডের প্রায় ৭০ হাজার বাসিন্দা যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করেন ফল্লু সেতু, সিদ্দিক সেতু ও লোহাপুল। বাসিন্দারা জানান, বছর খানেক আগে ফল্লু সেতুর সংস্কার হলেও হাল ফেরেনি বাকি দু’টির।
এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, লোহার পাত দিয়ে মোড়া দু’টি সেতুরই একাধিক জায়গা ভেঙে গিয়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। শুধু তাই নয়, সেতুর বিমগুলিও বেশ কয়েক জায়গায় নষ্ট হতে বসেছে। বাসিন্দারা জানান, নড়বড়ে এই দুই সেতু দিয়েই স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, সরকারি দফতর-সহ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করেন। সেতুর উপরে চলে মোটরবাইক, সাইকেল। এক কলেজ পড়ুয়ার আশঙ্কা, ‘‘লোহাপুল দিয়েই প্রতি দিনের যাতায়াত। মাঝেসাঝে সেতুটা এমন নড়ে, মনে হয় এই বুঝি ভেঙে গেল।’’
বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েক দশক ধরে স্থানীয় কাউন্সিলর, বিধায়ক ও শহরের মেয়রকে সমস্যার কথা জানানো হচ্ছে। প্রতি ক্ষেত্রেই সংস্কারের আশ্বাস মিললেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ জাভেদ খানের। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘এমনটা চলতে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যেই সেতু ভেঙে যাবে। কংক্রিটের সেতু বানালে সমস্যা মিটবে।’’
স্থানীয় কাউন্সিলর তথা পুরসভার বিরোধী দলনেতা ওয়াসিমুল হক অবশ্য বলেন, ‘‘মেয়রের কাছে সেতু সংস্কারের আবেদন জানিয়েছি। আশা করি, সমস্যার সমাধান হবে।’’ মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘এলাকায় গিয়ে সেতু দু’টি পরিদর্শন করেছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়রের নির্দেশে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা সেতু সংস্কারের আনুমানিক খরচের প্রস্তাব তৈরি করছেন। সেই খরচ পুরসভার একার পক্ষে বহন করা সম্ভব না হলে, রাজ্য সরকারের কাছে টাকা চেয়ে আবেদন জানানো হবে।