রুট গড়ে টোটো চলার অনুমতি, অসন্তুষ্ট বাস

চলার অনুমতি নেই। তবু শয়ে-শয়ে দাপিয়ে বেড়ায় পথে। এ বার আইনের আওতায় এনে ও রুট নির্দিষ্ট করে টোটো চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিল আসানসোল মহকুমা প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৬ ০০:২৩
Share:

আসানসোলের রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র।

চলার অনুমতি নেই। তবু শয়ে-শয়ে দাপিয়ে বেড়ায় পথে। এ বার আইনের আওতায় এনে ও রুট নির্দিষ্ট করে টোটো চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিল আসানসোল মহকুমা প্রশাসন। সোমবার এক বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এই শিল্পাঞ্চল জুড়ে হাজারখানেক টোটোকে কিছু রুট ঠিক করে চলার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে প্রশাসনের এমন পদক্ষেপে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বাস মালিকেরা। মহকুমা জুড়ে বাস ধর্মঘটের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

বাসের রুটে অটো চলার অভিযোগে বিবাদ ছিলই। আসানসোল মহকুমায় সম্প্রতি তার সঙ্গে যোগ হয় টোটো। বাস ও মিনিবাস মালিকদের সংগঠনের অভিযোগ, শিল্পাঞ্চলের প্রায় সব বাস রুটেই এখন অবাধে টোটো চলে। সে নিয়ে বছরখানেক ধরে ক্ষোভ-বিক্ষোভও হচ্ছে। বিষয়টি নজরে আসার পরে চিন্তায় পড়ে প্রশাসনও। শুধু অলিগলি নয়, জাতীয় সড়কেও উঠে পড়ে টোটোগুলি। পরিবহণ আইন অনুযায়ী জাতীয় বা রাজ্য সড়কে টোটো চলাচল নিষিদ্ধ। তাই সেগুলি চলাচলের অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন অনেক আগেই শহরে টোটো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। বন্ধ করা হয়েছিল শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু টোটোর শো-রুম। কিন্তু টোটো চলাচল বন্ধ তো দূর, আগের চেয়ে বেড়েছে বলে অভিযোগ।

এ বার পাকাপাকি ভাবে টোটো আইনসিদ্ধ করে চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আনতে চাইছে মহকুমা প্রশাসন। মহকুমাশাসক (আসানসোল) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘উপযুক্ত অনুমতি ও নির্দিষ্ট রুট ছাড়া শহরে কোনও টোটো চলবে না। আমরা অনুমতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছি।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে ৮৭২টি টোটোকে মহকুমার বিভিন্ন রুটে চলার অনুমতি দেওয়া হবে। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এখন মহকুমায় কম-বেশি দু’হাজার টোটো চলে। সবচেয়ে বেশি চলে রানিগঞ্জে। সংখ্যাটা প্রায় চোদ্দোশো। আসানসোল শহরে চলে প্রায় পাঁচশো। কুলটি, বরাকর, রূপনারায়ণপুর, বার্নপুর মিলিয়ে আরও শ’দুয়েক।

Advertisement

প্রশাসন যদি ৮৭২টি টোটো রাস্তায় চলার অনুমতি দেয় তবে বাকিদের ক্ষেত্রে কী হবে? মহকুমাশাসক জানান, মাস ছয়েক আগে টোটো চলার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হতেই টোটো চালকদের পুরসভায় যোগাযোগ করে একটি প্রাথমিক নম্বর নিতে বলা হয়েছিল। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য ৮৭২ জন চালক নাম নথিভুক্ত করান। শুধু তাঁদেরই টোটো চালানোর রুট ও অনুমতি দেওয়া হবে। মহকুমাশাসক আরও জানান, পরিবহণ আইন মোতাবেক বাসের রুট বা রাজ্য ও জাতীয় সড়কে টোটো চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না। এই নিয়ম কড়া হাতে পালন করতে পুলিশকে সাহায্যের আবেদন করা হবে।

বাস মালিকেরা অবশ্য দাবি করেন, তাঁদের রুটে অটোর চলাচল নিয়ে সংঘাত বহু দিনের। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া অবৈধ অটোর দাপটে বাসের ব্যবসা লাটে উঠতে বসেছে। বহু আবেদনের পরেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি বলে অভিযোগ। এর মধ্যে প্রশাসনের নিষেধ সত্ত্বেও মহকুমার প্রায় সব বাস রুটে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে টোটো। এখন প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার পরে টোটো চালকেরা নির্দিষ্ট রুটের বদলে বাস রুটে যাতায়াত শুরু করলে তাঁদের ব্যবসা আরও খারাপ হবে বলে বাস মালিকদের দাবি। সেক্ষেত্রে বাস বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া গতি থাকবে না বলেই জানান তাঁরা। মিনিবাস সংগঠনের সম্পাদক সুদীপ রায় ও বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক প্রকাশ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা এই আশঙ্কার কথা মহকুমাশাসককে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement