পড়ুয়াদের গাছ বিলি। নিজস্ব চিত্র
পালাকীর্তন, কবিগানের মতো হারিয়ে যেতে বসা বেশ কিছু লোকগানের চর্চা বাড়াতে চালু হচ্ছে লোকশিল্প চর্চাকেন্দ্র। পূর্বস্থলী ১ ব্লকে শুক্রবার লোকসংস্কৃতি উৎসব ও কৃষিমেলা উদ্বোধনে এসে সেই কেন্দ্রের শিলান্যাস করেন রাজ্যের তথ্য-সংস্কৃতি ও পর্যটন দফতরের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন।
পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুরে লোকশিল্প এবং কৃষিমেলায় এ বার নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ-সহ নানা দেশের লোকগান ও নৃত্যের ছোঁয়া। সেই সঙ্গে রাজ্যের নানা লোক সংস্কৃতিও তুলে ধরা হচ্ছে। উৎসব কমিটি জানায়, হাজারের বেশি লোকশিল্পীকে মঞ্চে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তবে ভাটিয়ালি, কবি, পালাকীর্তনের শিল্পীরা ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের শিল্পচর্চা বাড়াতে বছরখানেক আগে উৎসব কমিটির তরফে লোকশিল্প কেন্দ্র গড়ার জন্য একটি চার কাঠা জমি কেনা হয় শ্রীরামপুরে। সেটি গড়ার জন্য সরকারি সাহায্য চাওয়া হয়। সে জন্য ২৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা অনুমোদন করা হয়েছে।
ইন্দ্রনীলবাবু বলেন, ‘‘এখানে লোকশিল্পীরা গান বাঁধবেন, রেওয়াজ করবেন।’’ উৎসবের প্রধান উদ্যোক্তা তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান, কেন্দ্রে গানবাজনার নানা উপকরণ থাকবে। এই কেন্দ্র লোকগানের গবেষণাস্থলে পরিণত হবে, তাঁর দাবি।
শনিবার উৎসব কমিটির তরফে তিনটি মঞ্চে নানা অনুষ্ঠান করা হয়। একটিতে ব্লকের সাড়ে আটশো মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতী পড়ুয়াদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ছাত্রছাত্রীদের হাতে গাছ তুলে দেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক অরূপ চৌধুরী। ছিল বসে আঁকা প্রতিযোগিতা। এলাকার ২৮০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীরা সচেতনেতা মূলক নাটক-সহ নানা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
উৎসবে নদীর নামে নানা স্টল দেওয়া হয়েছে। খড়ি, বেহুলা, বাঁকা, ভাগীরথী, গুরজোয়ানি-সহ বিভিন্ন নামে স্টলগুলি তৈরি করেছে রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি উদ্যোগ দফতর। সেখানে শিল্পীদের তৈরি পণ্য রয়েছে। উৎসব প্রাঙ্গণে ঢেঁকিতে চাল ছেঁটে সরাসরি পিঠেপুলি তৈরির ব্যবস্থা হয়েছে। ই মহিলা ঢেঁকিতে চাল ছাঁটছেন। তা সিদ্ধ করে তৈরি হচ্ছে নানা রকম পিঠে। উৎসবে আসা বহু মানুষ গরম পিঠে কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন। উৎসব কমিটির সম্পাদক দিলীপ মল্লিক জানান, শীতের মরসুমে মানুষের পিঠে খাওয়ার উৎসাহ থাকে। সে জন্যই এমন আয়োজন।