প্রতীকী ছবি।
মানসিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অথচ পরিকাঠামো নেই বললেই চলে। এ বার চিকিৎসক, নার্স, মনোবিদের সংখ্যা বাড়াতে নজর দিয়েছে সরকার। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যৌথ উদ্যোগে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মানসিক রোগীদের ‘উৎকর্ষ চিকিৎসা’র ব্যবস্থা করা হবে। বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকও করেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, কেন্দ্রের ওই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে, বছর পাঁচেক আগে এসএসকেএম হাসপাতালে তৈরি হয়েছে ‘ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি’। দ্বিতীয় পর্যায়ে পাভলভ মানসিক হাসপাতাল ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজকে বেছেছেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক ভাবে অনাময় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মানসিক রোগীদের বিশেষ পরিষেবা দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু নানা সমস্যায় সেই ভাবনা থেকে সরে আসেন কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার রাজ্যের অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা (মানসিক) নৃপতি রায় ও স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি সচিব রূপম বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে ঠিক হয়, বাবুরবাগে হাসপাতাল আবাসনের পিছনে বেশ কয়েক বিঘে জমি পড়ে রয়েছে। সেখানেই গড়ে উঠবে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মানসিক চিকিৎসার কেন্দ্র ‘সেন্টার অফ এক্সসেলেন্স’।
হাসপাতালের মানসিক চিকিৎসা বিভাগের প্রধান অসীমকুমার মল্লিক বলেন, “বহির্বিভাগে গড়ে ২৫০ জন মানসিক রোগী আসেন। মেডিসিন বিভাগে দেখলে দেখা যাবে সেখানকার ৭০ শতাংশ রোগীই মানসিক। স্বয়ংসম্পূর্ণ ওই বিভাগ গড়ে উঠলে বিভিন্ন বিভাগের রোগীদের কাউন্সেলিং করা সম্ভব হবে।” বর্তমানে এই হাসপাতালে মানসিক বিভাগে ৩০টি আসন রয়েছে, সেখানে গড়ে ১৭-২০জন রোগী ভর্তি থাকেন। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, “আটতলা ভবন তৈরি হবে। সরকার ১৯ কোটি টাকা দেবে। এ ছাড়া চিকিৎসার যন্ত্রপাতি-সহ অন্য আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম কেনার জন্যেও সরকার ১১টি কোটি টাকা দেবে।”
জানা যায়, ন্যূনতম ১২০ শয্যার হাসপাতাল তৈরি হবে। এ ছাড়াও মেডিক্যাল কলেজে মানসিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসার যে তিনটি আসন রয়েছে, তা বেড়ে দশ হবে। ৪০ জন মনোবিদের পাশাপাশি হাসপাতালের বাইরে রোগীদের সুস্থ করে তোলার জন্য থাকবেন সমাজসেবীরা। ওই সব রোগীদের কী ভাবে সামলানো প্রয়োজন তার জন্যেই নার্সদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “মানসিক রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে চিকিৎসক, নার্সদের মানসিকতা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ওই মানসিকতারই পরিবর্তন একদম কলেজ স্তর থেকে করতে চাইছি।”