Burdwan University

কর্মী-পড়ুয়াদের ধাক্কাধাক্কি, রেজিস্ট্রারকে নিয়ে নালিশ

রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরীর দাবি, “রেজিস্ট্রারের নামে ‘হায়, হায়’ বলে চিৎকার হচ্ছে শুনে বাইরে গিয়ে দেখি একদল পড়ুয়া চিৎকার করছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:২৮
Share:

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে গোলমালের মাঝে। নিজস্ব চিত্র ।

স্নারকলিপি দিতে গিয়ে ধুন্ধুমার বাধল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। রেজিস্ট্রার বিভাগের কর্মী, নিরাপত্তারক্ষী থেকে আইন বিভাগের পড়ুয়ারা, একে অপরের বিরুদ্ধে ধাক্কাধাক্কির অভিযোগ করেছেন। গোলমালের মাঝে রেজিস্ট্রারকে হেনস্থার মুখে পড়তে হয় বলেও অভিযোগ। দু’তরফই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য গৌতম চন্দ্রের কাছে অভিযোগ করেছেন। পরিস্থিতি সামলাতে যায় পুলিশও।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আইন বিভাগে কয়েক জন ছাত্রের দৌরাত্ম্য নিয়ে গত সপ্তাহেই কিছু পড়ুয়া বিভাগের প্রধান-সহ কয়েক জনকে ঘেরাও করেন। তাঁদের দাবি ছিল, “ওই সব পড়ুয়ারা ২০১৮ সাল থেকে বিভাগে একপ্রকার অত্যাচার করছে। শিক্ষিকারাও তটস্থ। বারবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরেও সুরাহা হয়নি বলে জানান তাঁরা। সেই সূত্র ধরেই মঙ্গলবার বিকেলে আইন বিভাগের কয়েক জন পড়ুয়া উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। কর্তৃপক্ষ কিছু দিন সময় চান। ফের বুধবার বিকেলে রাজবাটী ক্যাম্পাসে স্মারকলিপি দিতে যান পড়ুয়ারা। অভিযোগ, স্মারকলিপি দিতে রেজিস্ট্রারের ঘরে সবাই ঢুকে পড়ায় কর্মী, নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে তাঁদের বচসা বাধে।

রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরীর দাবি, “রেজিস্ট্রারের নামে ‘হায়, হায়’ বলে চিৎকার হচ্ছে শুনে বাইরে গিয়ে দেখি একদল পড়ুয়া চিৎকার করছে। তাদের থামিয়ে পাঁচ জনকে স্মারকলিপি দিতে আসতে বলি। কিন্তু সবাই ঢুকতে চাইছিল। দরজা আটকে ধরায় আমাকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেওয়া হয়। নিরাপত্তা রক্ষী না থাকলে পরিস্থিতি ভাল হত না।” আইন বিভাগের পড়ুয়া মুন্সি আশরাফুল করিম, পম্পা নস্কর, রহিত তিওয়ারি, সুদীপ্ত সাধু-সহ বেশ কয়েক জন উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, পুরনো কিছু অভিযোগ নিয়ে তাঁরা রেজিস্ট্রারের কাছে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রেজিস্ট্রার দাবি মানেননি। উল্টে রেজিস্ট্রারের মদতে নিরাপত্তারক্ষীরা বাজে ব্যবহার করেছেন, শারীরিক ভাবেও আক্রমণ করেছে। ছাত্রীরাও হেনস্থা হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীরা ঘরের ভিতর আটকে রেখে মারধর করায় এক ছাত্র গুরুতর জখম হন বলেও তাঁদের দাবি। এক ছাত্র বলেন, “আইন বিভাগের ভিতর রেজিস্ট্রার সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছেন। পুরনো অভিযোগ নিয়ে যেতে রেজিস্ট্রার আমাকে নিজে ধাক্কা দিয়েছেন। আমরা চাই, আইন বিভাগে পড়াশোনার পরিবেশ ফিরে আসুক।” টিএমসিপি-র রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক খোন্দেকার আমিরুল ইসলাম (রামিজ) বলেন, “পড়ুয়াদের রক্ষা করা যাঁদের দায়িত্ব ও কর্তব্য তাঁরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের উপরে হামলা করলেন। রেজিস্ট্রারের এমন ভূমিকাও কাম্য নয়।”

Advertisement

রেজিস্ট্রারের যদিও দাবি, “আমার কাছে সব পড়ুয়াই সমান। আমি যে কোনও সময় স্মারকলিপি নিতে রাজি। কিন্তু কিছু পড়ুয়ার ভূমিকায় আমি আঘাত পেয়েছি।” বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূলপন্থী কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তথা বর্ধমান পুরসভার কাউন্সিলর শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নিরাপত্তারক্ষীরা ঠিক ভূমিকা পালন না করলে স্যরের (রেজিস্ট্রার) বিপদ ঘটে যেতে পারত। পড়ুয়াদের এ ধরণের আচরণ কাম্য নয়।”

উপাচার্য বলেন, “অনভিপ্রেত ঘটনা। রেজিস্ট্রার কাউকে আঘাত করবেন এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তবুও আমরা সিসি ক্যামেরা ফুটেজ় দেখব, তদন্তও হবে। মীমাংসার জন্য
বৈঠক ডাকছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন