সরকারি স্কুলে ভাটার খুদেরা

কালনা মহকুমায় ইটভাটা রয়েছে প্রায় ৬৫টি। তার মধ্যে কালনা শহর এবং তার আশপাশের এলাকায় রয়েছে ২৪টি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৪৫
Share:

n কালনার একটি ইটভাটায়। নিজস্ব চিত্র

ঠিকানা ভিন্‌ রাজ্যের। তবে ছেলেমেয়ে নিয়ে প্রতি বছরই আট-ন’মাস এ রাজ্যে থাকেন তাঁরা। যাযাবরের জীবনে শিক্ষা পৌঁছয় না ছেলেমেয়েগুলোর কাছে। ফলে একসময় তারাও ইটভাটাতেই কাজ করে। এ বার ভাটায় বেড়ে ওঠা খুদেদের সরকারি স্কুলে পাঠাতে উদ্যোগী হল কালনা মহকুমা প্রশাসন। শুক্রবার ইটভাটা মালিকদের সঙ্গে এ নিয়ে একটি বৈঠকও হয়।

Advertisement

কালনা মহকুমায় ইটভাটা রয়েছে প্রায় ৬৫টি। তার মধ্যে কালনা শহর এবং তার আশপাশের এলাকায় রয়েছে ২৪টি। এগুলির বেশির ভাগেই কাজ করেন ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওডিশা থেকে আসা শ্রমিকেরা। এর আগে কয়েকজন ইটভাটা মালিক শ্রমিকদের ছেলেমেয়েদের জন্য স্কুল খুলেছিলেন। তবে বেশির ভাগ স্কুলই বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি ভাগীরথীর সেতু তৈরির প্রাথমিক প্রস্তুতি দেখতে গিয়ে বিষয়টি নজরে আসে মহকুমাশাসক নীতিশ ঢালি এবং কালনা ২-এর বিডিও মিলন দেবগড়িয়ার। তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখেন, এক একটি ভাটায় তিন থেকে বারো বছরের প্রায় ৫০ জন ছেলেমেয়ে থাকে। এর পরেই তাদের স্কুলে পাঠানোর উদ্যোগ করা হয়।

বৈঠকে ভাটা মালিকদের জানানো হয় শ্রমিকদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো হলে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা কমবে। সরকারি স্কুলের মিড-ডে মিলে পুষ্টিকর খাবার, ব্যাগ, পোশাক পাবে তারা। আবার ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ধাক্কায় যে সমস্ত সরকারি স্কুল ছাত্রের অভাবে ধুঁকছে সেগুলিও প্রাণ পাবে। তবে স্কুলে শিশুদের পাঠানো ও নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্তো ভাটা মালিকদেরই করতে হবে বলে জানানো হয়। ভাটা মালিকেরাও প্রস্তাবে সায় দেন। সোমবারের মধ্যে কোন ভাটায় কত জন ছেলে মেয়ে রয়েছে তার তালিকা বিডিওকে দিতে বলা হয়।

Advertisement

তবে ভাটা মালিকদের একাংশের আশঙ্কা, ওই শ্রমিকেরা বেশির ভাগই হিন্দিভাষী। ছেলেমেয়েরাও হিন্দিতেই কথা বলে। ফলে বাংলা মাধ্যম স্কুলে তারা কতখানি মানিয়ে নিতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যদিও মহকুমা প্রশাসনের দাবি, বছরের বেশির ভাগ সময় এ রাজ্যে কাটানোয় অসুবিধে হবে না তাদের। বৈঠক হাজির শিল্পপতি সুশীল মিশ্র বলেন, ‘‘নেতিবাচক দিক নিয়ে ভাবতে চাই না। আপাতত প্রশাসনের ডাকে সাড়া দিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করে দেব।’’ মহকুমাশাসক জানান, আপাতত কালনা ও আশপাশের এলাকায় কাজ শুরু করা হবে। ফলে তা বাড়ানোর ভাবনা রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement