ফান পার্কে খেলা, মাতল শহর

মাঠে থিকথিক করছে ভিড়। কারও মুখে মুখোশ। কেউ বাজাচ্ছেন ভেঁপু। মাঝে মাঝেই বেজে উঠছে আইপিএলের চেনা সুর। স্টেডিয়ামে না থেকেও যেন মাঠে বসে খেলা দেখার আবহ— এমন এক অন্য স্বাদের ক্রিকেট দর্শন আগে কখনও হয়নি দুর্গাপুরের। মঙ্গলবার রাতে সেই অভিজ্ঞতাই হল শহরবাসীর।

Advertisement

অর্পিতা মজুমদার

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৬ ০০:৫৭
Share:

দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের চতুরঙ্গ মাঠে আইপিএল দেখার ব্যবস্থা। নিজস্ব চিত্র।

মাঠে থিকথিক করছে ভিড়। কারও মুখে মুখোশ। কেউ বাজাচ্ছেন ভেঁপু। মাঝে মাঝেই বেজে উঠছে আইপিএলের চেনা সুর। স্টেডিয়ামে না থেকেও যেন মাঠে বসে খেলা দেখার আবহ— এমন এক অন্য স্বাদের ক্রিকেট দর্শন আগে কখনও হয়নি দুর্গাপুরের। মঙ্গলবার রাতে সেই অভিজ্ঞতাই হল শহরবাসীর।

Advertisement

বিলাসপুর, গোয়া, অমৃতসর, ভোপাল, কোটা, পটনা-সহ দেশের ৩৪টি জায়গায় ‘আইপিএল ফান পার্ক’-এর আয়োজন করেছিল বিসিসিআই। ২৬ দিনে এই সব জায়গায় ফান পার্ক তৈরি করে খেলা দেখানোর ব্যবস্থা হয়। এ রাজ্যে একমাত্র দুর্গাপুরকেই রাখা হয়েছিল সেই তালিকায়। বেছে নেওয়া হয় শহরের সিটি সেন্টারের চতুরঙ্গ ময়দানকে। টেন্ট থেকে শুরু করে অ্যাঙ্করিং, আইপিএলের ‘সিগনেচার টিউন’, বাজনা— কী ছিল না সেখানে!

খেলা হচ্ছিল জায়ান্ট স্ক্রিনে। পুরো দস্তুর স্টেডিয়ামের আবহ। পর্দায় বিরাট কোহালি, সুরেশ রায়নাদের দেখে উল্লাসে ফেটে পড়ছিল জনতা। ফুড স্টল, বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন রাইডের ব্যবস্থাও ছিল। বিসিসিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯ মে পর্যন্ত পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, আইপিএল ফান পার্কে প্রায় তিন লক্ষ দশ হাজার লোকের সমাগম হয়েছে। পটনায় ৫০ হাজার দর্শক সমাগম হলেও গোয়ার ফান পার্কে এসেছিলেন ৫ হাজার ফ্যান। তবে দুর্গাপুরের মতো শহরে হাজার দশেক দর্শক হাজির হওয়ায় আপ্লুত আয়োজকেরা। আইপিএলের রুট ম্যানেজার রঞ্জিত দত্ত বলেন, ‘‘বিসিসিআই-এর এক আধিকারিক এসেছিলেন। দর্শকদের এমন উন্মাদনা দেখে ভীষণ খুশি হয়েছেন। কুপন বিলি, রিস্ট ওয়াচ পদ্ধতি অনুযায়ী প্রায় ১০ হাজার দর্শক এসেছিলেন। তবে তার বাইরেও অনেকে ঢুকেছিলেন। পরের বছর ফের এমন আয়োজন হবে এখানে।’’ পার্কে ছিলেন মহকুমা তথ্য-সংস্কৃতি আধিকারিক শান্তনু চক্রবর্তী।

Advertisement

বিসিসিআই সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এ দিন দুর্গাপুরের সঙ্গেই ফান পার্কের আয়োজন করা হয়েছিল ম্যাঙ্গালোরে। সেখানে ফ্যানের সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার। আইপিএলের রুট ম্যানেজার রঞ্জিতবাবু জানান, ফান পার্ক গত বছর থেকে আয়োজন হচ্ছে। এ রাজ্যে কোথাও ফান পার্ক আয়োজন করা হয়নি। এ বার দুর্গাপুরেই প্রথম তা করা হল। কলেজ পড়ুয়া থেকে কচিকাঁচা, ষোলো থেকে ষাট, পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে মাঠে এসেছিলেন। হাতে চিকেন ললিপপ বা চিপস, ঠান্ডা পানীয়ের বোতল নিয়ে জায়ান্ট স্ত্রিনে খেলা দেখার মজা চেটেপুটে নিয়েছেন তাঁরা। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক দল পড়ুয়া এক সঙ্গে বসে গলা ফাটাচ্ছিলেন বিরাট কোহালির সমর্থনে। গুজরাতের একটি করে উইকেট পড়েছে আর তাঁদের উল্লাস বেড়েছে। কিন্তু যখন ব্যাট করতে নেমে কোহালি শূন্য রানে ফিরে গেলেন, সেই রমেশ যাদব, সুরেশ সাউ, অনির্বান ভট্টাচার্য, উমেশ রামরা একেবারে চুপ।

মাঠে হাজির অনেকেই ছিলেন বেঙ্গালুরুর সমর্থক। প্রিয় দলের ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে পার্কে চিৎকার কমে যায়, টেনশনে নখ খুঁটতে থাকেন অনেকে। তরুণী রেশমি রায় বললেন, ‘‘এত তাড়াতাড়ি ছ’উইকেট পড়ে গেল। জানি না কী হবে!’’ তবে ডে’ভিলিয়ার্স হাত খুলতেই মাঠের পরিবেশ পাল্টে যায়। খেলা শেষে ছিল জনতার হর্ষধ্বনি। তার মাঝে বাড়ির পথ ধরার সময়ে এক যুবকের খেদোক্তি, ‘‘নাইট রাইডার্সের খেলাটা যদি এখানে দেখা যেত, দারুণ হত!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন