নিখরচার ওয়াই-ফাইয়ে মজেছে শহর

কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের পর বর্ধমান শহর। পুরসভার উদ্যোগে বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই পরিষেবা শুরুর প্রথম দিনেই সাধারণ মানুষের মধ্যে এই নিয়ে কৌতূহল তুঙ্গে উঠেছে। ছাত্রছাত্রীরা তো বটেই শহরের প্রবীণদেরও এই পরিষেবা ব্যবহারের কৌশল জানতে পুরসভায় উঁকি মারতে দেখা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৫ ০২:৪৭
Share:

পুরভবনে নতুন পরিষেবা ব্যবহারে ব্যস্ত অনেকেই। —নিজস্ব চিত্র।

কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের পর বর্ধমান শহর। পুরসভার উদ্যোগে বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই পরিষেবা শুরুর প্রথম দিনেই সাধারণ মানুষের মধ্যে এই নিয়ে কৌতূহল তুঙ্গে উঠেছে। ছাত্রছাত্রীরা তো বটেই শহরের প্রবীণদেরও এই পরিষেবা ব্যবহারের কৌশল জানতে পুরসভায় উঁকি মারতে দেখা গিয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত ও জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালের উপস্থিতিতে এই পরিষেবার উদ্বোধন করেছিলেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত পুরভবন ও কার্জন গেট চত্বর জুড়ে এই পরিষেবা মিলবে। পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের দাবি, “পরে গোটা শহর ও শহরতলিতে ওয়াই-ফাই পরিষেবা ছড়িয়ে দেওয়া হবে।”

শুক্রবার শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যে সব যুবক, ব্যবসায়ী, পড়ুয়ারা নিজেদের ফোনে ওয়াই-ফাই চালু করার চেষ্টা করেছিলেন তাঁদের প্রায় সবাই সফল হয়েছেন। স্থানীয় গোলাহাটের বাসিন্দা তথা ইলেকট্রিক মিস্ত্রি রসিদ আহমেদ বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতেই খবর পাই শহরে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক চালু হয়েছে। তারপর প্রযুক্তিগত খুঁটিনাটি জেনে আমি আমার স্মার্ট ফোনে ওই সুবিধাটি চালু করেছি। এর ফলে কাজে অনেক সুবিধা হচ্ছে।” বর্ধমানের টাউন হল পাড়ার বাসিন্দা কলেজ পড়ুয়া সদানন্দ বিশ্বাস বলেন, “মাঝে মাঝে গোলাপবাগ ক্যাম্পাসেও নেটওয়ার্ক থাকে না। আশা করি বর্ধমান পুরসভার চালু করা ওয়াই-ফাইয়ের টাওয়ার সব সময় পাওয়া যাবে।”

Advertisement

কলকাতার পরেই বর্ধমানে এই পরিষেবা চালু হওয়ায় শহরবাসী হিসেবে গর্বিত বোধ করছেন অনেকে। জিটি রোডের ব্যবসায়ী কল্যান রজকের কথায়, “আমার মতো অনেকেই জানতেন যে একমাত্র কলকাতাতেই এই পরিষেবা পাওয়া সম্ভব। বর্ধমান শহরে এই পরিষেবা মিলবে এ কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।” ওয়াই-ফাই পরিষেবা চালুর পর সাধারণ মানুষ ও পড়ুয়াদের সঙ্গে কম্পিউটার ব্যবসায়ীরাও খুশি। শহরের স্পন্দন কমপ্লেক্সের কম্পিউটার ব্যবসায়ী প্রমোদ মণ্ডলের আশা, এই পরিষেবা বিনামূল্যে চালু হওয়ার পর শহরের মধ্যে দামী মোবাইল, ট্যাব, কম্পিউটার ও ল্যাপটপের বিক্রি অনেকটাই বাড়বে।

গোটা শহরকে ‘ওয়াই-ফাই জোন’ করে তুলতে বর্ধমান আদালত চত্বরে প্রশাসনিক ভবন ও পুরসভা ভবনের উপরে দু’টি টাওয়ার বসানো হয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, আপাতত প্রতিটি টাওয়ারে ৫০০ মিটার করে মোট হাজার মিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে এই পরিষেবা পাওয়া যাবে। এই দু’টি টাওয়ার বসাতে মোট ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়াও গোটা প্রকল্প বাবদ পুরসভার তহবিল থেকে প্রতি মাসে ২২ হাজার টাকা খরচ হবে। টাকা তুলতে ভবিষ্যতে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেওয়ার কথা ভাবছে পুরসভা। পুরপ্রধান স্বরূপবাবু জানান, ইতিমধ্যেই রাজবাড়ি, নীলপুর-সহ কয়েকটি এলাকায় আরও কয়েকটি টাওয়ায় বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে রাজবাড়ি, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, গোলাপবাগ ক্যাম্পাস, বর্ধমান মহিলা কলেজ, রাজ কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ চত্বর এই পরিষেবার মধ্যে আসার কথা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন