গুসকরা

সিদ্ধান্ত সাত দিনে, হুঁশিয়ারি

দলের পর্যবেক্ষকের ডাকা বৈঠকেও বিভাজন ঢাকতে পারলেন না গুসকরার কাউন্সিলরেরা। পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তো ছিলই বোর্ড ভাঙার প্রশ্নে দ্বিমত দেখা গেল তাঁদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:১৭
Share:

বোলপুরে কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

দলের পর্যবেক্ষকের ডাকা বৈঠকেও বিভাজন ঢাকতে পারলেন না গুসকরার কাউন্সিলরেরা। পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তো ছিলই বোর্ড ভাঙার প্রশ্নে দ্বিমত দেখা গেল তাঁদের।

Advertisement

কয়েকদিন আগে কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট ও আউশগ্রামের তৃণমূল পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডলকে গুসকরার হাল ধরার দায়িত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে বোর্ড ভাঙার কথাও বলেন। সোমবার বোলপুরের বৈঠকে অনুব্রতও কাউন্সিলরদের হুঁশিয়ারির সুরে জানান, এটাই শেষ সুযোগ। আর কোনও গোলমালের ঘটনা কানে এলে কাউকে রেয়াত করা হবে না।

বৈঠকের গোড়া থেকেই গুসকরার ১১জন কাউন্সিলর ৮-৩-এ ভাগ হয়ে যান। পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায়ের উল্টো দিকে ছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান চঞ্চল গড়াই, প্রাক্তন মহিলা উপপুরপ্রধান মল্লিকা চোঙদার ও বর্তমান মহিলা উপপুরপ্রধান চাঁদনিহারা মুন্সি। এই তিন জনেই পর্যবেক্ষকের কাছে বোর্ড ভেঙে দেওয়ার পক্ষে জোর সওয়াল করেন। বাকি ৮ জনের রায় ছিল পুরপ্রধানের দিকে। প্রায় দু’ঘন্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর অনুব্রতবাবু বলেন, “বৈঠকে সকলের কথা শুনেছি। সবার কথা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। ববির কাছে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেব (পুরমন্ত্রী ববি হাকিম)। তারপরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”

Advertisement

জানা গিয়েছে, বৈঠকের শুরুতেই অনুব্রতবাবু গুসকরায় কাউন্সিলরদের মধ্যে কেন বারবার গোলমাল হচ্ছে, কোথায় উন্নয়ন প্রকল্প আটকে থাকছে তা জানতে চান। পুরপ্রধানের বিরোধী কাউন্সিলররা জানান, সরকারের নিয়মকে তোয়াক্কা না করে কাজ হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দরপত্র ডাকা হচ্ছে না। যে’কটিতে ডাকা হচ্ছে সেখানেও দরপত্র জমা দিতে গিয়ে ঠিকাদাররা দেখছেন, বাক্সটাই নেই! মনমতো ঠিকাদারদের কাজ দেওয় হচ্ছে। প্রতিবাদ করলে পুরপ্রধান ওই সব কাউন্সিলরের ওয়ার্ডের কাজ নানা আটকে দিচ্ছেন বলেও তাঁদের দাবি। পাল্টা ‘টিম বুর্ধেন্দু’ও জানান, কী ভাবে উন্নয়নের কাজ ব্যাহত করছেন ওই সব কাউন্সিলররা।

অনুব্রতবাবুর ঘনিষ্ঠ এক নেতা বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনের মুখে গুসকরাতে অনাস্থা নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছিল তা নিয়ে মুখ খোলেন দাদা। দুই প্রবীণ নেতাকে বকাবকি করেন। ওই দুই নেতাই দাদাকে জানান, ওই সময় অনাস্থা এনে তাঁরা ভুল করেছিলেন।” বৈঠকে সুশীলা গ্রামে বোমাবাজির প্রসঙ্গ উঠলে সুকৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান পুরপ্রধান। সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর সনাতন বেসরা জানান, তিনি দলের একটি গোষ্ঠীর হাতে মার খেয়েছেন। অনুব্রতবাবুর ঘনিষ্ঠ ওই নেতা জানান, সবার বক্তব্য শোনার পর দাদা তাঁদের জানান, পুরসভার ভিতরে কিংবা বাইরে কোনও গোষ্ঠী চলবে না। সবাই তৃণমূলের কাউন্সিলর। সবাইকে এক সঙ্গে চলতে হবে।

জানা গিয়েছে, সভার মাঝেই পুরপ্রধান ও তাঁর সঙ্গী নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্য কাউন্সিলরেরা গুসকরায় দল ও পুরসভা পরিচালনার জন্য বিধায়ক অভেদানন্দ থান্ডারকে মাথায় রেখে পাঁচ জনের কমিটি গড়ার দাবি জানান। বিধায়ক অবশ্য বলেন, “এই সব কাউন্সিলরদের বিশ্বাস নেই। এই কমিটিতে আমি থাকব না।” তা শুনে অনুব্রত বলেন, “সব লিখে রাখলাম। উপরে জানাব। সাত দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত আসবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন