Coaching

নজরে মাধ্যমিক, ক্লাবঘরেই ‘স্কুল’

শিক্ষকদের দাবি, দূরত্ব বজায় রেখে ও কোভিড সংক্রান্ত বিধি মেনে বৃহস্পতিবার ও শনিবার সকাল ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত ক্লাস চলছে।

Advertisement

সুপ্রকাশ চৌধুরী

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২০ ০১:৪৬
Share:

চলছে ক্লাস। ছবি: উদিত সিংহ

স্কুল কবে খুলবে এখনও ঠিক নেই। অনলাইনে ক্লাস হলেও অনেকে সেই সুবিধা নিতে পারছেন না। ফলে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে চিন্তায় দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা। পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের নিয়ে ছোট কেন্দ্র গড়ে ক্লাস করাচ্ছেন শিক্ষকেরা।

Advertisement

বর্ধমানের তেজগঞ্জ হাইস্কুলের দুই শিক্ষক প্রতনু রক্ষিত ও মহম্মদ মহিউদ্দিন মণ্ডল জানান, স্কুলে মিড-ডে মিলের চাল, আলু দিতে এসে অভিভাবকদের কাছে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার অসুবিধার কথা শোনেন তাঁরা। অনেকে পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবছে বলে জানতে পারেন। স্কুলছুট রুখতে তখন থেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে বা দামোদরের পাড়ে পড়ানো শুরু করেন তাঁরা। অগস্ট মাসের শুরু থেকে দামোদরের বংপুর চাষিমানা এবং সদরঘাট সুকান্তপল্লিতে দু’টি কেন্দ্রও গড়েন তাঁরা। এখন সেখানে প্রায় ১২ জন করে দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা পড়ছে। শিক্ষকদের দাবি, দূরত্ব বজায় রেখে ও কোভিড সংক্রান্ত বিধি মেনে বৃহস্পতিবার ও শনিবার সকাল ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত ক্লাস চলছে।

উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তেজগঞ্জ হাইস্কুলের প্রাক্তনীরাও এগিয়ে এসেছেন। একটি ক্লাব ঘর ও একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্লাসের কথা ছড়িয়ে পড়তে পাশে দাঁড়িয়েছেন তেজগঞ্জ হাইস্কুলের শিক্ষাকর্মী প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আদর্শ বিদ্যালয়ের শিক্ষক অশোককুমার সরকার। আপাতত এই চার জন মিলেই চালাচ্ছেন পড়াশোনা। তাঁরা জানান, অঙ্ক, ভৌত বিজ্ঞান, জীবন বিজ্ঞান এবং ইতিহাস পড়ানো হচ্ছে আপাতত।

Advertisement

পড়ুয়া পারুল মাঝি, টুম্পা সাউ, বিকাশ চৌধুরী, প্রকাশ বাউরিরা বলে, ‘‘সামনেই মাধ্যমিক। স্কুল না থাকায় মুশকিল হচ্ছিল। কী ভাবে এগোব বুঝতে পারছিলাম না। স্যরেরা এগিয়ে আসায় খুব উপকার হয়েছে।’’

শিক্ষক মহম্মদ মহিউদ্দিন মণ্ডল থাকেন নাদনঘাটে। ৬০ কিলোমিটার মোটরবাইক চালিয়ে পড়াতে আসেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘অভিভাবকেরা সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। সামনেই মাধ্যমিক। ছাত্রদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে এই উদ্যোগে।’’ ভাবনার প্রধান কান্ডারি প্রতনু রক্ষিতও বলেন, ‘‘অনেকেই অনলাইন ক্লাস করতে পারছিল না। পিছিয়ে পড়ছিল। তাই অন্তরের তাগিদ থেকেই এই ক্লাস চালু করেছি।’’’ যদি স্কুল না খোলে তা হলে আরও কয়েকটি সেন্টার খোলার পরিকল্পনা রয়েছে, দাবি তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন