ডিপিএল। ফাইল চিত্র
বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্ল্যান্ট, দীর্ঘ দিন ধরে এমন দাবি তুলে আন্দোলন করে আসছে বামের নানা গণ সংগঠন। কিন্তু শাসকদল বারবারই দাবি করেছে, ডিপিএলের কোকআভেন প্ল্যান্ট বন্ধ নয়, আপাতত উৎপাদনহীন হয়ে রয়েছে। এই চাপান-উতোরে ইন্ধন দিয়েছে সম্প্রতি রাজ্য সরকার প্রকাশিত নানা সরকারি সংস্থা পুনর্গঠনের প্রস্তাবিত তালিকা। সেখানে চালু না থাকা প্ল্যান্ট হিসেবে কোকআভেন প্ল্যান্ট ঠাঁই পাওয়ায় সরব হয়েছে বামেরা। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, বিষয়টি নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করা হচ্ছে।
রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থা ডিপিএলের এই কোকআভেন প্ল্যান্টে সাধারণ কয়লা থেকে ল্যাম কোক, হার্ড কোক, কোল গ্যাস উৎপন্ন হতো। মোট পাঁচটি ব্যাটারি চালু ছিল। বরাবরই সংস্থায় লাভজনক হিসেবে পরিচিত ছিল কোকওভেন প্ল্যান্ট। পরে নানা কারণে প্রথম চারটি ব্যাটারি বন্ধ হয়ে যায়।
মূলত স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (সেল) ডিপিএলে কয়লা পাঠিয়ে উৎপাদিত হার্ড কোক, ল্যাম কোক কিনে নিত। এছাড়া কোল গ্যাস কিনত সেল-এরই সংস্থা অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট (এএসপি)। কিন্তু গত কয়েক বছরে এএসপি কোল গ্যাস নেওয়া বন্ধ করে দেয়। শেষ দু’বছরে কোকওভেন প্ল্যান্টে লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৯৬ কোটি টাকা। কয়লার জোগান অপর্যাপ্ত থাকায় ২০১৫-র জুনে উৎপাদনহীন হয়ে পড়ে পঞ্চম ব্যাটারিটিও।
আরও পড়ুন: কোনও দিন আর রং খেলব না
সিপিএমের দাবি, কোকআভেন প্ল্যান্ট বন্ধই করে দেওয়া হয়েছে। বরাবর সিটু এ কথাই জানিয়ে এসেছে। অথচ, তৃণমূলের তরফে বারবার দাবি করা হয়েছে, প্ল্যান্ট বন্ধ নয়, উৎপাদনহীন হয়ে রয়েছে। সিপিএমের দুর্গাপুর ২ পূর্ব জোনাল সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ, ‘‘প্ল্যান্ট চালু করতে রাজ্য সরকারের কোনও সদর্থক উদ্যোগ ছিল না। এখন তা অন্য সংস্থায় মিশিয়ে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।’’ তাঁর আরও দাবি, বর্তমান অবস্থায় কোকআভেন প্ল্যান্ট যে আর কখনও চালু হবে না, তালিকা প্রকাশের পরে তা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এখন এখানকার প্রায় তেরোশো কর্মীর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা চিন্তিত।’’
তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় অবশ্য তা মানতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সিপিএম অকারণে এ নিয়ে রাজনীতি করছে। সংস্থার ভবিষ্যতের কথা ভেবেই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার। কোনও কর্মীর কাজ যাবে না, তা আগেই জানানো হয়েছে।’’