ধান ভাঙানোয় জিএসটি তুলে নেওয়ার আবেদন করবে দফতর

সে কথা তুলে ধরে জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “ভর্তুকি দিয়ে সরকার চাল মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। শিবির থেকে ধান কিনে চাল ভাঙায় রাজ্য সরকার। ধান ভাঙানোর উপর ৫ শতাংশ জিএসটি চাপানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর খামখেয়ালিপনায় এটা ঘটছে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫৬
Share:

নতুন যন্ত্র। নিজস্ব চিত্র

দশ একর জায়গা জুড়ে খাদ্য দফতর বর্ধমানে গুদাম তৈরি করেছে বলে শুক্রবার একটি সভায় জানালেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বর্ধমানের আলমগঞ্জের কল্পতরু মাঠে ‘রাইসপ্রো টেক-এক্সপো’র উদ্বোধন করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “ওই গুদাম তৈরি হলে একলপ্তে ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ মেট্রিক টন চাল রাখা যাবে।” এই ঘোষণার পাশাপাশি মন্ত্রী ধান ভাঙানোর উপরেও জিএসটি বসায় কেন্দ্র সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “ধান ভাঙানোর উপর জিএসটি তুলে নেওয়ার দাবিতে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীকে খাদ্য দফতর চিঠি দেবে। অর্থমন্ত্রী এ ব্যাপারে কেন্দ্রের কাছে সরব হবেন।”

Advertisement

শুক্রবার থেকে তিন দিনের জন্য চালকলের দেশ-বিদেশের যন্ত্রপাতি নিয়ে একটি প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। বেঙ্গল রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বর্ধমান শাখার উদ্যোগে এই প্রদর্শনীতে ১৫০টি সংস্থা যোগ দিয়েছে। চালকল সংগঠনের বর্ধমান শাখার সম্পাদক সুব্রত মণ্ডলের দাবি, চিন-জাপান-ব্রাজিলের মত বিদেশি সংস্থারাও এই প্রদর্শনীতে যোগ দিয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালের প্রদর্শনীর পর চালকল তৈরিতে ১০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করেছিল ওই সব সংস্থাগুলি। রাজ্য সংগঠনের কার্যনির্বাহী সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, “আধুনিক যন্ত্রে ধান ভাঙানো হলে গুণগত চাল আমরা পাই। ওই চালের কদর রয়েছে। সেটা সব চালকল মালিক বুঝলে আমাদের সুবিধা।”

সে কথা তুলে ধরে জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “ভর্তুকি দিয়ে সরকার চাল মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। শিবির থেকে ধান কিনে চাল ভাঙায় রাজ্য সরকার। ধান ভাঙানোর উপর ৫ শতাংশ জিএসটি চাপানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর খামখেয়ালিপনায় এটা ঘটছে।” তিনি জানান, এ ব্যাপারে তাঁরা রাজ্যের অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। ওই চিঠি নিয়ে অর্থমন্ত্রী কেন্দ্রের কাছে ক্ষোভের কথা তুলে ধরবেন। এ ছাড়াও তিনি কেন্দ্র সরকার কী ভাবে বঞ্চনা করছে, তা নিয়েও সরব হন। তাঁর অভিযোগ, “কেন্দ্র সরকারকে দেওয়া চালের টাকা পাওয়ার জন্য ২৫ বার খাদ্য কমিশনার দিল্লি গিয়েছেন। কিন্তু বকেয়া টাকা মেলেনি। আবার মান্ডি শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া নিয়েও বঞ্চনা করছে কেন্দ্র সরকার। এ নিয়েও খাদ্য কমিশনার দিল্লি গিয়ে মজুরি বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে এসেছে।”

Advertisement

এক দিকে চালকলগুলিকে আধুনিক করার জন্য দেশি-বিদেশি যন্ত্রপাতি প্রদর্শন করছে চালকল মালিক সমিতি। অন্য দিকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ১৪০০ চালকলের বেশকিছু বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। বন্ধ চালকলগুলি খোলার জন্য খাদ্য দফতর একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান জ্যোতিপ্রিয়বাবু। মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জানান, ধানের উৎপাদন বেড়েছে। চাল তৈরির জন্য আরও চালকলের প্রয়োজন। একদিকে চালকলগুলিকে আধুনিক হতে হবে, পাশাপাশি নতুন চালকল খোলার ব্যাপারেও উদ্যোগী হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন