শিশু নিগ্রহের ঘটনা রুখতে গ্রাম সংসদ, ব্লক ও ওয়ার্ড ধরে শিশু সুরক্ষা কমিটি (সিপিসি) গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলা শিশু সুরক্ষা দফতর। সে জন্য জেলা জুড়ে অভিযানেও নামা হয়েছে বলে দফতরের তরফে জানানো হয়েছে। সম্প্রতি আসানসোলে এ বিষয়ে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করেন দফতরের আধিকারিকেরা। ব্লক ও পুরসভার আধিকারিকদের এই উদ্যোগ রূপায়ণে দ্রুত পদক্ষেপের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সুদেষ্ণা মুখোপাধ্যায় জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের সুসংহত শিশু সুরক্ষা প্রকল্পের অধীনে এই উদ্যোগ হয়েছে। গ্রাম ও শহর জুড়ে প্রতিনিয়ত যে ভাবে শিশু নিগ্রহের ঘটনা ঘটছে তা রুখতেই এই পদক্ষেপ। তিনি জানান, মূলত শিশুদের চারটি অধিকার নিশ্চিত করাই এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য— বেঁচে থাকার অধিকার, তাদের উন্নয়ন, সুরক্ষা ও সমাজে অংশগ্রহণের অধিকার।
সুদেষ্ণাদেবী বলেন, ‘‘বর্ধমান জেলার ৩১টি ব্লকেই এই কমিটি গঠন হয়েছে। গ্রাম সংসদ ও পুরসভার ওয়ার্ড স্তরে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, আসানসোল ও দুর্গাপুর পুরসভা কর্তৃপক্ষকে ওয়ার্ড স্তরে দ্রুত এই কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। ব্লক, গ্রাম সংসদ ও ওয়ার্ড স্তরে গঠিত কমিটিগুলির সদস্যদের শিশু সুরক্ষা ও অধিকার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। জেলার বাছাই করা ২০ জন অভিজ্ঞ প্রশাসক পুরো বিষয়টির দেখভাল করবেন। আসানসোলের মহকুমাশাসক তথা পুরসভার কমিশনার প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’
এর পাশাপাশি শিল্পাঞ্চলে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির উন্নয়নেও জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলার শিশু বিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক অনুপম দত্ত। তিনি জানান, রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুসারে শিশু আলয় প্রকল্পের অধীনে জেলা জুড়ে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আসানসোল ও দুর্গাপুরের সব ক’টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রকেই এই প্রকল্পের অধীনে আনা হবে। দফতরের এক আধিকারিক জানান, প্রাথমিক ভাবে দুর্গাপুর ও আসানসোল ২০টি করে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রকে শিশু আলয় প্রকল্পের অধীনে উন্নত করা হয়েছে।
তবে ওই আধিকারিক জানান, আসানসোল মহকুমার চারটি ব্লকের বেশির ভাগ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অবস্থা বেশ খারাপ। এমনকী, পুরসভা এলাকার অঙ্গওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিরও ঠিক মতো দেখভাল হয় না। জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সুদেষ্ণা মুখোপাধ্যায় জানান, শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের ক্ষেত্রে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। শিশু আলয় প্রকল্পে যে সব উদ্যোগ হয়েছে তা ঠিক মতো প্রয়োগ হলে ফল মিলবে বলে তাঁর আশা।