এরুয়ারে ‘সোনার কালী’। নিজস্ব চিত্র
চাষের মরসুম। খেতের কাজ চলেছে জোরকদমে। শেখ মুজিবর, শেখ রহিমদের নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই। এর মধ্যেই গ্রামের মেয়েদের বাড়ি আনাতে হবে। কারণ, আর ক’দিন পরেই ‘সোনার কালী’ পুজো। বহু বছর ধরে এ ভাবেই ভাতারের এরুয়ারে এই পুজোকে কেন্দ্র করে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির ছবি দেখা যায়।
এই পুজো অনুষ্ঠিত হয় শ্রাবণ মাসের অমাবস্যা তিথিতে। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তথা ক্ষেত্র-গবেষক শিবশঙ্কর ঘোষের দাবি, “প্রায় পাঁচ শতাব্দী আগে সন্ন্যাসী গোস্বামী নামে এক সাধক এই পুজোর প্রতিষ্ঠা করেন। শ্রাবণ মাসের অমাবস্যায় তিনি দেহ রাখেন। সাধনক্ষেত্রেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। সেই বেদীর উপরেই দেবীর পুজো অনুষ্ঠিত হয়।’’ দেবী মন্দির তৈরি ও নিত্য সেবার জন্য জমি দান করেন বর্ধমানের মহারাজারা। এরুয়ারের জমিদারেরাও দেবীর পুজোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
গ্রামের মেয়ে শ্রাবন্তী বুট, সুহিতা কোনারের পাশাপাশি শাবিনা, মনিরাও বলেন, ‘‘বছরভর মুখিয়ে থাকি কখন পুজোর সময়ে বাপের বাড়ি যাওয়ার জন্য।’’ গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা শেখ আনোয়ার জানান, দেবীকে নিয়ে গ্রাম পরিক্রমায় যোগ দেন উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। পুজোর প্রসাদও গ্রহণেও সকলের উৎসাহ থাকে নজরে পড়ার মতো। গ্রামের বাসিন্দা তথা ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত-কর্মাধ্যক্ষ মানগোবিন্দ অধিকারী জানান, পুজো উপলক্ষে মেলার আয়োজনেও প্রধান ভূমিকা নেন মুসলিমরাই।