গৃহ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ টাকা পাওয়ার পরে দেড় বছর কেটে গেলেও বাড়ি তৈরি হয়নি। উপরন্তু, বরাদ্দ অর্থের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা নেওয়ার জন্য তাঁরা ভুল তথ্য জমা দিয়েছেন পঞ্চায়েতে। কেতুগ্রামের গঙ্গাটিকুরীর তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমনই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দিন কুড়ি আগে মহকুমাশাসককে চিঠি দিয়েও বিষয়টি জানিয়েছেন তাঁরা।
মেমারি ১ ব্লকেও ওই প্রকল্পে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৪৫ জন উপভোক্তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন বিডিও শৈলশেখর ঘোষ। জানা গিয়েছে, গত তিনটি আর্থিক বর্ষে মেমারি ১ ব্লকে প্রায় তিন হাজার উপভোক্তাকে ইন্দিরা আবাস যোজনার বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রথম কিস্তির ৩৫ হাজার টাকা উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে ৬২ জন টাকা তুলে নিলেও বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেননি বলে বিডিও দফতরে অভিযোগ আসে। তার পরে বিডিও উপভোক্তদের বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করতে বলেন। তাঁর মধ্যে কয়েক জন বাড়ি তৈরি করে তার ছবি তুলে বিডিও-র দফতরে পাঠান। কিন্তু আমাদপুর, দলুইবাজার ২, দেবীপুর, দুর্গাপুর, গোপগন্তার ২, নিমো ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ৪৫ জন বাড়ি তৈরি করেননি। তাঁদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে মেমারি থানার পুলিশ।
কাটোয়া ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে গঙ্গাটিকুরী পঞ্চায়েত এলাকার ১৫৪ জন ঘর পাওয়ার জন্য মনোনীত হন। তার মধ্যে ৩৩ জনের নাম চূড়ান্ত হয়। বাড়ি তৈরি পিছু প্রত্যেক উপভোক্তার তিন ধাপে ৪০হাজার, ৩০হাজার ও ১০০ দিনের জব কার্ডে ১৫ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। তার মধ্যে ২০১৫ সালের জুনে প্রথম কিস্তির ৪০ হাজার টাকা চলেও আসে। অভিযোগ, গঙ্গাটিকুরী উত্তরপাড়ার বাসিন্দা শ্যামল থান্দার, দিলীপ থান্দার ও কল্যাণ মাঝি প্রথম কিস্তির ৪০ হাজার টাকা তুলে নিলেও এখনও পর্যন্ত গৃহ নির্মাণে হাত লাগাননি। স্থানীয় সুশীল মাঝি, রতন মাঝি, সুমন্ত লাহাদের দাবি, ‘‘ওই টাকা তুলে অন্য কাজে খরচ করার পরে ওরা দ্বিতীয় কিস্তির ৩০ হাজার টাকা তোলার জন্য ভুয়ো নকশা জমা দিয়েছে পঞ্চায়েতে।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে দিনমজুর দিলীপবাবু, শ্যামলবাবু, কল্যাণবাবুদের দাবি, ‘‘ঘরের ভিত শুরু করেছি। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেলে ছাদ, মেঝে করব।’’ গঙ্গাটিকুরীর পঞ্চায়েত প্রধান জগন্নাথ মাঝি বলেন, ‘‘বিষয়টি জানি না। খোঁজ নেব।’’ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন কাটোয়ার মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি।