টাকা আত্মসাতের নালিশ ভাতারে

প্রধানের প্যাড ‘চুরি’ করে ঠিকাদারের কাছ থেকে পঞ্চায়েতের প্রাপ্য প্রায় চার লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল ওই পঞ্চায়েতেরই এক তৃণমূল সদস্যের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভাতার শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৪০
Share:

প্রধানের প্যাড ‘চুরি’ করে ঠিকাদারের কাছ থেকে পঞ্চায়েতের প্রাপ্য প্রায় চার লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল ওই পঞ্চায়েতেরই এক তৃণমূল সদস্যের বিরুদ্ধে। ওই টাকা নেওয়ার সাক্ষী হিসেবে প্রধানের প্যাডে ভাতারের সাহেবগঞ্জ ১ পঞ্চায়েতের সদস্য ছাড়াও শাসকদলের স্থানীয় সাত নেতা-কর্মী সই করেছেন বলে অভিযোগ। শুক্রবার ঠিকাদার ও পঞ্চায়েত সদস্য-সহ আট জনের সই সংবলিত প্যাডের প্রতিলিপি দিয়ে বিডিওর কাছে অভিযোগ করেন ওই পঞ্চায়েতের প্রধান ফুলকলি বাগ।

Advertisement

এ দিন প্রধান দাবি করেন, “আমার অনুপস্থিতিতে দফতর থেকে প্রধানের প্যাড নিয়ে ঠিকাদারের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করা হয়েছে। আমি ঘুণাক্ষরেও জানতে পারিনি! ঘটনার প্রায় ৬ মাস পরে জানতে পেরে খোঁজখবর নিতেই সত্য ঘটনা উঠে আসে। তার পর থেকে ওই সদস্য ও নেতাদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বারবার বলা হয়। তাঁরা টাকা না দেওয়ায় বিডিও-র কাছে অভিযোগ জানালাম।” ভাতারের বিডিও প্রলয় মণ্ডল বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করা হচ্ছে।”

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর এপ্রিলে বাড়ি বাড়ি ১০০ দিনের প্রকল্প থেকে কেঁচো সার তৈরি পরিকল্পনা নেয় ওই পঞ্চায়েত। সেই মতো বাড়িতে পরিকাঠামো তৈরি, কেঁচো সার তৈরি প্রশিক্ষণ ও উৎপাদিত কেঁচো সার বাজারজাত করার জন্য বর্ধমানের একটি ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে পঞ্চায়েত। সাহেবগঞ্জ ১ পঞ্চায়েত এলাকার ৭৪৮টি বাড়ি নিজেরাই সেই পরিকাঠামো গড়ে ফেলায় ঠিকাদার সংস্থাকে ওই সব পরিবার পিছু এক হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন ফুলকলিদেবী। তাঁর অভিযোগ, “দু’দফায় ওই টাকা দেবে বলে জানায় ঠিকাদার সংস্থা। সেই মতো প্রথম দফায় ৫০০ টাকা করে দেয়। কিন্তু দ্বিতীয় দফার ৫০০ টাকা দেওয়ার আগেই আমার প্যাড চুরি করে আর্থিক লেনদেন হয় ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে। সেই টাকা কিন্তু উপভোক্তাদের ঘরে পৌঁছয়নি।” প্রধানের দাবি, চুক্তিপত্র অনুযায়ী ওই টাকার পরিমাণ ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা। অথচ গত ১৭ জুন প্রধানের প্যাডে লেখা রয়েছে, ‘ওই টাকা বুঝে পেলাম’। তার নীচে পঞ্চায়েত সদস্য দিলীপ ভট্টাচার্য, তৃণমূল নেতা বাসুদেব যশ সহ আট জনের সই রয়েছে।

Advertisement

দিলীপবাবু ও বাসুদেববাবু স্বীকার করে নিয়েছেন, প্রধানের অনুপস্থিতিতেই তাঁরা ঠিকাদার সংস্থার কাছ থেকে ওই টাকা নিয়েছেন। তাঁদের দাবি, সেই টাকা যে তাঁরা উপভোক্তাদের দিয়েছেন, তার প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু প্রধানের প্যাড ব্যবহার কেন? অভিযুক্তদের দাবি, “সাদা কাগজে চুক্তি করে টাকা দিতে চাইছিল না ঠিকাদার সংস্থা। সে জন্য প্রধানের প্যাড ব্যবহার করা হয়।” কিন্তু, এ ভাবে প্রধানকে অন্ধকারে রেখে তাঁরই প্যাডে ঠিকাদার সংস্থার কাছ থেকে টাকা নেওয়া ঠিক কিনা, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি অভিযুক্তেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন