রায়না শ্যামসুন্দর কলেজ

কলেজের ডিপার্টমেন্টে ঢুকে বেধড়ক মার টিএমসিপি-র, জ্ঞান হারালেন শিক্ষক!

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ অগস্ট ওই শিক্ষক অধ্যক্ষের কাছে পাঠানো চিঠিতে অভিযোগ করেছেন, ‘বৃহস্পতিবার ইতিহাস বিভাগে বসে থাকার সময় ছাত্র সংসদের ছেলেরা এসে আমার সঙ্গে অশালীন আচরণ করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়না শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share:

রায়না শ্যামসুন্দর কলেজ

দুই কলেজ শিক্ষকের পারিবারিক বিবাদের ‘মীমাংসা’ করার নামে এক শিক্ষককে মারধর করার অভিযোগ উঠল টিএমসিপি-র কর্মীদের বিরুদ্ধে। রায়নার শ্যামসুন্দর কলেজের ঘটনা। ইতিহাসের ওই শিক্ষক মিলনচন্দ্র রায় কলেজ ছেড়ে উত্তরবঙ্গে বাড়িতে চলে গিয়েছেন।

Advertisement

ছ’দিন আগে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি জানান মিলনবাবু। মঙ্গলবার ১০ জনের একটি তদন্ত কমিটিও গড়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষ গৌরীশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মঙ্গলবারই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কী ঘটেছে, সেই কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার পরে বলতে পারব।’’

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ অগস্ট ওই শিক্ষক অধ্যক্ষের কাছে পাঠানো চিঠিতে অভিযোগ করেছেন, ‘বৃহস্পতিবার ইতিহাস বিভাগে বসে থাকার সময় ছাত্র সংসদের ছেলেরা এসে আমার সঙ্গে অশালীন আচরণ করে। তারপর প্রচণ্ড মারধর করে। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। সহকর্মীরা আমাকে উদ্ধার করেন। আজকের ঘটনায় আমি খুব ভীত ও সন্ত্রস্ত।’ এ দিন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থেকে ফোনে তিনি বলেন, “আমাকে ছেলেরা মারধর করেছে। আমি খুবই অসুস্থ। কথা বলতে পারছি না, যা বলার অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি।’’

Advertisement

২০১০ সাল থেকে শ্যামসুন্দর কলেজে পড়ান মিলনবাবু। কলেজের আবাসনেই থাকেন তিনি। কলেজ সূত্রের খবর, ওই আবাসনের বাসিন্দা এক সহকর্মীর সঙ্গে পারিবারিক ঝামেলা হয় তাঁর। গত ২৬ অগস্ট আবাসন চত্বরে দু’জনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। মিলনবাবুর ঘনিষ্ঠদের দাবি, ওই ঘটনার মীমাংসার নামে ছাত্র সংসদের ছেলেরা মিলনবাবুর কাছে যায়। তার পরেই ইতিহাস বিভাগের ভিতর বসে থাকা মিলনবাবুকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তিনি রায়গঞ্জের একটি হাসপাতালে ভর্তিও ছিলেন।

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ মাইতি। তাঁর কথায়, “কলেজের ভিতর এ রকম কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে মনে পড়ছে না।’’ টিএমসিপি-র একটি গোষ্ঠীর আবার দাবি, জেলা সংগঠনের সভাপতি বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের কয়েকজন অনুগামী কলেজটি ঘিরে রেখেছেন। তাঁরাই ছাত্র সংসদ নিয়ন্ত্রণ করেন। টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এসএমএস বা ফোনে কোনও জবাব দেননি। সম্প্রতি মেমারি কলেজেও শিক্ষক নিগ্রহে নাম জড়িয়েছিল ছাত্র নেতা মুকেশ শর্মার। পরে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।

এই কলেজে স্নাতকস্তরে ভর্তি চলাকালীন ছাত্র সংসদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কলেজের বাইরে বহিরাগত পড়ুয়াদের ভিড় ছিল। অভিযোগ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তদন্তকারী দলও কলেজে যায়। এই ঘটনার পরে বহিরাগত ও প্রাক্তন ছাত্রদের কলেজে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবারের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, কোনও কারণে কলেজে ঢুকতে গেলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন