কেন্দ্রকে ফের তোপ মমতার

বর্ধমান শহরে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রশাসনিক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্র চাইছে, কাটোয়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র না হোক। আমাদের কাছে জমি চাওয়া হয়। ১০০ একর দিয়েছে রাজ্য। তা-ও ল্যান্ড ব্যাঙ্ক থেকে, যাতে স্থানীয়দের সঙ্গে গোলমাল না হয়। তার পরেও এটা তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৭ ০১:২১
Share:

হুঁশিয়ারি: প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কেন্দ্রের চক্রান্তে অনিশ্চয়তার মুখে দুই বর্ধমানের দু’টি প্রকল্প— অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় এনটিপিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পশ্চিম বর্ধমানে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানা গোটানোর তোড়জোড় করছে কেন্দ্র, দাবি তাঁর।

Advertisement

বর্ধমান শহরে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রশাসনিক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্র চাইছে, কাটোয়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র না হোক। আমাদের কাছে জমি চাওয়া হয়। ১০০ একর দিয়েছে রাজ্য। তা-ও ল্যান্ড ব্যাঙ্ক থেকে, যাতে স্থানীয়দের সঙ্গে গোলমাল না হয়। তার পরেও এটা তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’ কাটোয়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রায় তিনশো কোটি টাকা লগ্নি করে এনটিপিসি। বাম আমলে ৫৫৬ একর জমি অধিগ্রহণ হলেও পরে জমি-জটে থমকে যায় প্রকল্পটি। দরকার ছিল আরও ২৯৪ একর। রাজ্য একশো একর দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। বাকি জমি চাষিদের কাছ থেকে কিনছে এনটিপিসি। সংস্থা সূত্রের খবর, ২৪ একর জমি কেনা বাকি।

সম্প্রতি প্রকল্পে নিযুক্ত প্রায় অর্ধেক আধিকারিক বদলি হন। তাতেই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়েন জমিদাতারা। জমিদাতা চাষি সাগর বন্দ্যোপাধ্যায়, নুর আলি শেখরা বলেন, ‘‘প্রকল্প না হলে এলাকার অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। দশ বছরে চাষাবাদও হচ্ছে না।’’ তবে বিদ্যুৎ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বিদ্যুৎমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বুঝিয়েছেন, কাটোয়া নিয়ে কেন্দ্র ‘ধীরে চলো’ নীতি নিচ্ছে। কারণ, নীতিগত ভাবে কেন্দ্র নতুন তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে লগ্নি করতে চায় না। কেন্দ্রের ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রী তথা আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘উনি (মমতা) সবেতেই চক্রান্ত দেখছেন। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরে তো মজুত করা যায় না। কারিগরি দিকটাও ভাবতে হয়। এনটিপিসি-র প্রকল্পের জন্য যা সবচেয়ে ভাল হবে, সেটাই আমাদের সরকার করবে।’’

Advertisement

রেল অধিগৃহীত বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানার ভাগ্য নির্ধারণে সম্প্রতি ‘ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল’-এ পাঠিয়েছে কেন্দ্র। কারখানা বন্ধের চক্রান্তের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছে নানা শ্রমিক সংগঠন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভারত সরকার বলছে, বার্ন স্ট্যান্ডার্ড বন্ধ করে দেব। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই কারখানা অধিগ্রহণ করে বাঁচিয়েছি। কারখানা ক্ষতিতে চলছে, এমনটা নয়। তবু তুলে দেওয়ার চক্রান্ত হচ্ছে।’’ বাবুল অবশ্য বলেন, ‘‘বার্ন স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর সঙ্গে আমার দু’বার কথা হয়েছে। আবার কথা হবে।’’ রাজ্যের শিল্প-পরিস্থিতি নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলে বাবুলের মন্তব্য, ‘‘চক্রান্তের কথা ছেড়ে উনি (মমতা) বরং রেলমন্ত্রীর সঙ্গে এক টেবিলে বসুন। উনি কী চান, তা নিয়ে আলোচনা করুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন