দু’দিন নিখোঁজ থাকার পরে
Death

ঠিকাদারের দেহ মিলল কুয়ো থেকে

আসানসোল পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কুলটি ও হিরাপুরের ডিহিকা জলপ্রকল্প তৈরির বরাত পেয়েছিলেন সাধনবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৫৮
Share:

দেহ মেলার খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিজনেরা। (ইনসেটে) সাধন রায়। নিজস্ব চিত্র।

নিখোঁজ হওয়ার দু’দিন পরে, পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে উদ্ধার হল ঠিকাদারের দেহ। শনিবার প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন আসানসোল পুরসভার দু’টি জলপ্রকল্প নির্মাণের বরাত পাওয়া ঠিকাদার সাধন রায় (৫৬)। আসানসোলের সেন-র‌্যালে এলাকায় সোমবার বিকেলে তাঁর দেহ মেলে। কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হল, তা রাত পর্যন্ত স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। গোটা ঘটনা নিয়ে তারাও ধন্দে বলে দাবি পরিবারের।

Advertisement

আসানসোল পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কুলটি ও হিরাপুরের ডিহিকা জলপ্রকল্প তৈরির বরাত পেয়েছিলেন সাধনবাবু। তাঁর বাড়ি আসানসোলের ইসমাইলে। স্ত্রী দীপ্তি রায় জানান, গত মঙ্গলবার স্বামীকে নিয়ে তিনি সেন-র‌্যালে এলাকায় বাপের বাড়ি এসেছিলেন। শনিবারই তাঁদের ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। প্রতিদিন প্রাতঃভ্রমণে বেরনোর অভ্যাস ছিল সাধনবাবুর। সে দিন ভোর ৫টা নাগাদ শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তার পরে আর ফেরেননি।

পুলিশ জানায়, নিখোঁজ-ডায়েরি হওয়ার পরেই তল্লাশি শুরু হয়। সোমবার বিকেল ৫টা নাগাদ শ্বশুরবাড়ির অদূরে একটি পরিত্যক্ত কুয়োয় সাধনবাবুর দেহটি ভাসতে দেখেন এলাকার কিছু বাসিন্দা। খবর পেয়ে পরিজনেরা পৌঁছন। পোশাক দেখে তাঁরা শনাক্ত করেন। পুলিশ ও দমকল এসে দেহ উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।

Advertisement

ঘটনার পিছনে কী কারণ রয়েছে, সে নিয়ে তাঁরাও ধন্দে বলে জানিয়েছেন মৃতের পরিজনেরা। দীপ্তিদেবী জানান, সাধারণত সকাল ৬টা নাগাদ প্রাতঃভ্রমণে বেরোতেন তাঁর স্বামী। কিন্তু শনিবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ বেরনোর তোড়জোড় শুরু করেন। বাড়ির লোকজন বাধা দেওয়ায় সাড়ে ৫টা নাগাদ বেরোন। তাঁর আরও দাবি, অন্য দিনগুলিতে ফোন, টাকার ব্যাগ, চশমা নিয়ে বেরলেও সে দিন সব নেননি। তা তাঁদের কাছে আশ্চর্যের ঠেকেছে বলে দাবি পরিবারের লোকজনের।

দীপ্তিদেবী দাবি করেন, ‘‘স্বামীর কাছে জেনেছিলাম, তাঁর অনেক টাকা বিল পাওনা হয়েছে। কিন্তু সে টাকা পাচ্ছেন না।’’ তবে সাধনবাবুর সঙ্গে কারও শত্রুতার কথা তাঁর জানা নেই বলে দাবি করেন তিনি। পরিবারের দাবি, পুরসভা ছাড়া, রেল, পূর্ত দফতর, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরেও ঠিকাদারি করতেন সাধনবাবু। কার কাছ থেকে টাকা পাওনা ছিল, তা-ও স্পষ্ট জানাতে পারেননি দীপ্তিদেবী।

আসানসোল পুরসভার জল দফতরের মেয়র পারিষদ পূর্ণশশী রায় বলেন, ‘‘ঠিকাদার নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়ার পরেই, আমরা পুলিশকে তল্লাশির আর্জি জানিয়েছিলাম। ঘটনাটি মর্মান্তিক।’’ এই ঘটনার জেরে কুলটি জলপ্রকল্পের কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন পুর কর্তৃপক্ষের একাংশ। ১৩ ফেব্রুয়ারি দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে ওই প্রকল্পের উদ্বোধন করে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ। মার্চ থেকে কুলটির একাংশে জল সরবরাহ চালু হওয়ার কথা। তার কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। পূর্ণশশীবাবু বলেন, ‘‘প্রকল্পের কাজ ব্যাহত হলে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন