Contractual Staff

‘হিসাব বহির্ভূত’ টাকা-সহ ধৃত কর্মী

তন্ময় রায়চৌধুরী নামে ওই কর্মীর টেবিলের ড্রয়ার থেকে হিসাব বহির্ভূত ৪০ হাজার টাকা, জেলা পরিষদের বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য ১৫৮টি অ্যাডমিট কার্ডের ‘কাউন্টার পার্ট’ উদ্ধার হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

লিফ্‌ট বসানোর নাম করে মঙ্গলবার বিকেলে জেলার গ্রামোন্নয়ন দফতরে গিয়েছিলেন জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী। আলোচনার ফাঁকে আচমকা ঠিকা-চুক্তিতে নিযুক্ত এক কর্মীর টেবিলে হানা দেন তিনি। তন্ময় রায়চৌধুরী নামে ওই কর্মীর টেবিলের ড্রয়ার থেকে হিসাব বহির্ভূত ৪০ হাজার টাকা, জেলা পরিষদের বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য ১৫৮টি অ্যাডমিট কার্ডের ‘কাউন্টার পার্ট’ উদ্ধার হয় বলে অভিযোগ। বুধবার ওই দফতরের প্রকল্প আধিকারিক মানস হালদার বর্ধমান থানায় অভিযোগ করার পরে গ্রেফতার করা হয় ওই কর্মীকে।

Advertisement

জেলাশাসক বলেন, “ঠিকা চুক্তিতে নিযুক্ত ওই কর্মী সম্পর্কে আমাদের কাছে নানা অভিযোগ আসছিল। তাই আচমকা হানা দেওয়া হয়। টেবিলের ড্রয়ার থেকে টাকা, নিয়োগ পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পরে অ্যাডমিট কার্ড মিলেছে। তাঁকে নিয়ম মেনে শো-কজ করা হয়েছে।’’ পুলিশ জানায়, ধৃতের বাড়ি বীরভূমের শান্তিনিকেতনের কাছে সুরুল গ্রামে। তিনি ওই দফতরের যুগ্ম-সহায়ক (প্রশিক্ষক) পদে রয়েছেন।

প্রশাসনের কর্তারা জানান, ওই কর্মীর বিরুদ্ধে কখনও টাকা নয়ছয়, কখনও জেলা পরিষদে চাকরির আশ্বাস, আবার কখনও প্রশিক্ষণের টাকা নিজের কাছে রেখে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সে জন্যই জেলাশাসক ট্রেজারি ভবনের পাশের দফতরে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর ২টো নাগাদ ওই দফতরে যান জেলাশাসক। সঙ্গে আরও কয়েকজন আধিকারিক ছিলেন। দফতরের ঢোকার মুখে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে ভবনের লিফ্‌ট কী ভাবে করা যায়, ট্রেজারি ভবনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব, এ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন। তারপর দফতরে গিয়ে বিভাগের কাজকর্ম নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন জেলাশাসক। তন্ময়ের সঙ্গে কথা বলার সময়ে তাঁর কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কথা বলার ফাঁকেই তাঁর টেবিলের ড্রয়ারে খুলে ফেলেন।

Advertisement

অভিযোগ, তখনই দেখা যায়, ৮০টি ৫০০ টাকার নোট এবং গত বছর ১৩ জানুয়ারি জেলা পরিষদের বিভিন্ন পদে নিয়োগের পরীক্ষা হওয়া ১৫৮টি অ্যাডমিট কার্ডের ‘কাউন্টার পার্ট’ রয়েছে। ওই সব পদে নিয়োগ এখনও হয়নি। নিয়োগ পরীক্ষার ফল বেরনোর পরেও কেন ওই সব নথি নির্দিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়নি, সে প্রশ্নের জবাব জেলাশাসককে তন্ময় দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। এর পরেই প্রকল্প আধিকারিককে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর নির্দেশ দেন জেলাশাসক। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, ‘‘অভিযানের বিষয়টি কারও না জানা থাকায় হাতেনাতে ধরা গিয়েছে।”

এ দিন আদালতে অভিযুক্তের আইনজীবী সদন তা বলেন, ‘‘আমার মক্কেলকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। অভিযোগে মক্কেলের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার কথাও বলা হয়নি। কেন ধরা হল, সেটাও পরিষ্কার নয়।’’ ধৃতকে আদালতে তোলা হলে সোমবার পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন