জলপ্রকল্প নিয়ে প্রচার, তরজায় শাসক-বিরোধী

পুরভোটের প্রচারে কেন্দ্রীয় সরকারের টাকায় তৈরি হওয়া জলপ্রকল্পকে কংগ্রেস সাফল্য হিসেবে তুলে ধরলেও ওই প্রকল্প থেকে সরবরাহ করা জলের পরিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল বিরোধী সিপিএম ও তৃণমূল। কেন্দ্রীয় জেএনইউআরএম (জওহরলাল নেহরু আরবান মিশন) প্রকল্পের অধীনে ভাগীরথী থেকে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ শুরু হয় গত বছরের গোড়ায়। পুরসভা সূত্রে জানা গেল, প্রকল্পটি অনুমোদন পায় ২০০৭ সালে। ওই প্রকল্পের ৮০ শতাংশ টাকা কেন্দ্র, ১৫ শতাংশ রাজ্য সরকার ও বাকি পাঁচ ভাগ টাকা দিয়েছে কাটোয়া পুরসভা। ওই প্রকল্পের জন্য মোট ২৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানা গেল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪০
Share:

কাটোয়া জলপ্রকল্পের ভবন। —নিজস্ব চিত্র।

পুরভোটের প্রচারে কেন্দ্রীয় সরকারের টাকায় তৈরি হওয়া জলপ্রকল্পকে কংগ্রেস সাফল্য হিসেবে তুলে ধরলেও ওই প্রকল্প থেকে সরবরাহ করা জলের পরিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল বিরোধী সিপিএম ও তৃণমূল।

Advertisement

কেন্দ্রীয় জেএনইউআরএম (জওহরলাল নেহরু আরবান মিশন) প্রকল্পের অধীনে ভাগীরথী থেকে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ শুরু হয় গত বছরের গোড়ায়। পুরসভা সূত্রে জানা গেল, প্রকল্পটি অনুমোদন পায় ২০০৭ সালে। ওই প্রকল্পের ৮০ শতাংশ টাকা কেন্দ্র, ১৫ শতাংশ রাজ্য সরকার ও বাকি পাঁচ ভাগ টাকা দিয়েছে কাটোয়া পুরসভা। ওই প্রকল্পের জন্য মোট ২৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানা গেল। কাটোয়ার শ্মশানঘাটের কাছে গঙ্গার জল উত্তোলন করে তা প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে সুবোধস্মৃতি রোডে পরিশোধন করা হচ্ছে বলে পুরসভার সূত্রে দাবি করা হয়েছে। জল পরিশোধন করার পরেই বিভিন্ন জলাধার থেকে তা প্রায় ৬ হাজার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। দিনে ৪ বার জল সরবারহ করা হয়। কাটোয়ার বিদায়ী পুরপ্রধান তথা ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী শুভ্রা রায়ের দাবি, “প্রকল্পের বাইরেও পুরসভা নিজস্ব তহবিল থেকে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাইপলাইন বসিয়ে পানীয় জল সরবরাহ করছে।’’ এই জল প্রকল্পকেই পুরভোটের প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার করেছে কংগ্রেস।

যদিও বিরোধী তৃণমূল ও সিপিএম প্রায় একই সুরে অভিযোগ করছে ওই প্রকল্প থেকে সরবারহ করা জল মোটেই পরিশুদ্ধ নয়। নিয়মিত জলাধারগুলি পরিষ্কারও করা হয় না বলে অভিযোগ। তৃণমূল তাদের প্রচারপত্রেই অভিযোগ করেছে, পুরসভা থেকে জল পরিশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণও সরবারহ করা হয় না। কাটোয়া শহরের তৃণমূলের সভাপতি অমর রামের অভিযোগ, “নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় কোথাও কোথাও জল ঘোলাটে জল সরবারহ করা হচ্ছে। সরবারহ করা জল থেকে রীতিমতো দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছে। বাসিন্দাদের পানীয় জল কিনে খেতে হচ্ছে।” সিপিএম-ও তাদের দলীয় ইস্তেহারে ওই জল প্রকল্পকে ‘অসম্পূর্ণ’ বলে অভিযোগ করেছে। দলের জেলা কমিটির সদস্য অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় মনে করেন, “সরবারহ করা জল মোটেই পরিশ্রুত নয়।’’

Advertisement

জলপ্রকল্প নিয়ে সিপিএম ও তৃমমূলের অভিযোগকে বিশেষ পাত্তা না দিয়ে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “জলাধারগুলি সপ্তাহে একদিন পরিষ্কার করা হয়। জলের নমুনাও পরীক্ষা করা হয়। জলে জীবাণু থাকলে পরিশোধনের সময় বিশেষ পদ্ধতির সাহায্যে তা নির্ণয় করা হয়।’’ কংগ্রেসের দলীয় ইস্তেহারে বরং উল্টে অভিযোগ করা হয়েছে, তৃণমূল ও সিপিএম বিভিন্নভাবে জলপ্রকল্পের কাজ আটকে দিতে চেয়েছিল। প্রকল্প এলাকায় ২৪ ঘন্টার বিদ্যুৎ সরবারহও নিশ্চিত করা গিয়েছে বলেও কংগ্রেসের দাবি।

জলপ্রল্পের পাশপাশি ‘জলকর’ নিয়েও তৈরি হয়েছে শাসক-বিরোধী তরজা। জলকর অবিলম্বে তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। যদিও রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “জলকর নেওয়া হয় না। পরিষেবা বাবদ মাসে ৪০ টাকা করে নেওয়া হয়। অথচ জল পরিশোধনের কাজে বিদ্যুৎ বিল-সহ বিভিন্ন খাতে ১০ লক্ষেরও বেশি টাকা দিতে হয় পুরসভাকে। রাজ্য সরকার ওই টাকা মকুব করে দিলে পুরসভাকেও ওই ৪০ টাকা কের নিতে হত না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন