প্রতীকী ছবি
প্রতি দিন দু’শো নমুনা সংগ্রহ করতে হবে, শুক্রবার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। পর দিনই নমুনার সংখ্যা লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গিয়েছে বলে জানালেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। তাঁরা জানান, নমুনা সংগ্রহ বাড়াতে বর্ধমানের সাধনপুরে নির্মীয়মাণ কৃষি ভবনে ‘কিয়স্ক’ খোলা হয়েছে। প্রত্যেক পরিযায়ী শ্রমিকের লালারসের নমুনা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সেই সঙ্গে প্রত্যেক বিডিওকে ‘অসুরক্ষিত’ এলাকা খুঁজে বার করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী। ওই সব এলাকা থেকেও নমুনা সংগ্রহে জোর দিতে চাইছে জেলা প্রশাসন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘নমুনা সংগ্রহ বাড়ানোর জন্য নির্মীয়মাণ কৃষি ভবনে ‘কিয়স্ক’ খোলা হয়েছে। সেখান থেকে প্রথম দিনই ৮৭ জনের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে। শুক্রবার এক বৈঠকে জেলায় দু’শো জনের নমুনা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। শনিবারই সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গিয়েছে। নমুনা আমাদের ‘নোডাল’ মেডিক্যাল কলেজ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েক দিন আগে নমুনা সংগ্রহ বাড়ানোর জন্যে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, গাংপুরের বেসরকারি হাসপাতাল, কাটোয়া ও কালনা মহকুমা হাসপাতালে ‘কিয়স্ক’ বসানো হয়। শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় দৈনিক নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা ৮৫-১০৩, এর মধ্যে আটকে ছিল। শনিবার ২১৩ জনের নমুনা সংগ্রহ হয়। এ দিন থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নমুনা সংগ্রহ শুরু হতেই সংখ্যাটা বেড়ে গিয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে একাধিক তথ্য-পূরণ করতে হচ্ছে দফতরের কর্মীদের। তার পরে নমুনার সঙ্গে তথ্য-সম্বলিত ফর্ম সংশ্লিষ্ট ‘নোডাল’ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে হচ্ছে। পুরো বিষয়টি সম্পূর্ণ করতে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের অনেকটা সময় ব্যয় হচ্ছে। সে কারণে জেলা স্বাস্থ্য দফতর একটি মোবাইল ‘অ্যাপ’-এর সাহায্য নিয়েছে। যে সব স্বাস্থ্যকর্মী এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত, তাঁদের ‘স্মার্ট ফোন’ দেওয়া হয়েছে। নমুনা সংগ্রহের আগের রাতে তাঁরা তথ্য সংগ্রহ করে নিচ্ছেন। সকালে অ্যাপে সেই সব তথ্য ‘আপলোড’ করে নমুনা নিয়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সিএমওএইচ-এর বক্তব্য, ‘‘এতে সময় অনেকটা কম লাগছে। নমুনা সংগ্রহে গতি এসেছে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জামালপুর, গলসি, মেমারি, কেতুগ্রাম, মাধবডিহি, আউশগ্রাম দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকেরা জেলায় ঢুকছেন। বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের আটকানো হচ্ছে। তার পরে তাঁদের সাধনপুরে নির্মীয়মাণ কৃষি ভবনে পাঠিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘প্রত্যেক বিডিওকে ‘অসুরক্ষিত’ এলাকা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানার আধিকারিক এবং ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে বসে তা চিহ্নিত করে জেলায় রিপোর্ট পাঠাতে হবে। কী ভাবে সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা যায়, তার চিন্তাভাবনা করা হবে।’’ বিভিন্ন এলাকায় মাঝ রাতে পরিযায়ী শ্রমিকেরা আটকে পড়ছেন। তাঁদের ‘কোয়রান্টিন সেন্টারে’ পাঠানো হচ্ছে। ওই সব শ্রমিকেরা যাতে রাতে অভুক্ত না থাকেন, সে জন্য প্রত্যেক বিডিওকে শুকনো খাবার মজুত করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানান।