Coronavirus

ডাক্তার-পাড়াতেও ‘নিয়ন্ত্রণ’ চাইছে প্রশাসন

আজ, সোমবার বেলা ১টা নাগাদ ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ (আইএমএ)-কে সঙ্গে নিয়ে বর্ধমানের খোসবাগানের বড় ক্লিনিকগুলির সঙ্গে আলোচনা করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কী ভাবে জমায়েত কমানো সম্ভব সেই সিদ্ধান্ত নেবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ০৪:৩২
Share:

বর্ধমান শহরের খোসবাগান এলাকা। নিজস্ব চিত্র

ডাক্তার-পাড়াকেও নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে জেলা প্রশাসন।

Advertisement

আজ, সোমবার বেলা ১টা নাগাদ ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ (আইএমএ)-কে সঙ্গে নিয়ে বর্ধমানের খোসবাগানের বড় ক্লিনিকগুলির সঙ্গে আলোচনা করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কী ভাবে জমায়েত কমানো সম্ভব সেই সিদ্ধান্ত নেবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা জারি করবে।

জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, “খোসবাগানে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন। বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত হয়। ফলে সে বিষয়েও আলোচনা করে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, খোসাবাগানে প্রায় সাড়ে চার হাজার চিকিৎসকের চেম্বার রয়েছে। তাঁদের একটা বড় অংশ কলকাতা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, দিল্লি থেকে আসেন। পূর্ব বর্ধমান জেলার মানুষজন তো বটেই, বাঁকুড়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পুরুলিয়া, হুগলি জেলা ও ঝাড়খণ্ডের একাংশের মানুষও চিকিৎসার জন্য বর্ধমান শহরে আসেন। পুলিশের হিসাবে প্রতিদিন গড়ে এক লক্ষ ১০ হাজার মানুষ দিনভর খোসবাগান চত্বরে থাকেন।

Advertisement

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, “করোনাভাইরাস প্রতিরোধের মূল অস্ত্র হচ্ছে—জমায়েত না করা, পরস্পর নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা। চিকিৎসকেরা এ ব্যাপারে সতর্ক রয়েছেন। তবুও প্রশাসনের তরফ থেকে একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।’’ জানা গিয়েছে, বৈঠকে প্রতিটি ক্লিনিকে করোনাভাইরাস নিয়ে প্রচার চালানো, সচেতনামূলক পোস্টার টাঙানো, রোগীর সঙ্গে লোকজন আসা কম করার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া, স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারের নির্দেশিকা মানার জন্যও বলা হবে।

এ দিন জেলায় আরও ৩,৬৯২ জনকে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ রাখার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। এঁরা প্রত্যেকেই ভিন‌্ রাজ্য থেকে জেলায় ফিরে এসেছেন। মুম্বই থেকে বম্বে মেলে সকালেই বর্ধমান স্টেশনে ১৮৪ জন নেমেছিলেন। তাঁদের বেশির ভাগের বাড়ি মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলায়। এ দিন স্টেশনে ‘থার্মাল স্ক্রিনিং’ করানো হয়েছে তাঁদের। কয়েকজনের শারীরিক পরীক্ষাও করা হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, ভিন‌্ দেশ থেকে ফেরত ১৮২ জন ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ রয়েছেন। সংখ্যাটা গত দু’দিন ধরে একই রয়েছে। আর ভিন‌্ রাজ্য থেকে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ রয়েছেন ১১,০২২ জন।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকা ব্যক্তিরা অনেক ক্ষেত্রেই প্রশাসন কিংবা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ মানছেন না। বর্ধমানের ইছলাবাদ, কালীবাজারের মতো জায়গায় ভিন‌্ রাজ্য থেকে বেশ কয়েকজন যুবক ফিরে এসেছেন। খবর পেয়ে বর্ধমান থানা তাঁদের বাড়ির ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়ে আসেন। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকার পরামর্শও দেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই ওই যুবকদের পাড়ায় বেরিয়ে আড্ডা দিতে দেখা গিয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বলতে গেলে তাঁদের সঙ্গে অশান্তিও বাধছে। সেই কারণে জেলা প্রশাসন ঠিক করেছে, নির্দিষ্ট এলাকা ধরে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকা মানুষজনের বাড়ি-বাড়ি প্রতিদিন খোঁজ নিতে যাবেন সিভিক ভলান্টিয়ার, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, আশাকর্মীরা। জেলাশাসক বলেন, “এতে নজরদারি আরও বাড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন