প্রতীকী ছবি
হুগলির শেওড়াফুলির বাসিন্দা একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানার আধিকারিকের ‘করোনাভাইরাস পজ়িটিভ’ রিপোর্ট এসেছে রবিবার। তাঁর দুর্গাপুর-যোগ সামনে আসতেই চিন্তায় পড়েছেন কর্তৃপক্ষ ও কর্মীরা।
সংস্থা সূত্রের দাবি, শেওড়াফুলির ওই প্রৌঢ় ওই কারখানার দুর্গাপুরের সগড়ভাঙা ইউনিটে সহকারী জেনারেল ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন। জানুয়ারি মাসে তাঁর অবসরের পরে, সংস্থা তাঁকে কলকাতায় অফিসে পুনর্বহাল করে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনি দুর্গাপুর, বাঁকুড়ার বড়জোড়ার কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের গুণমান খতিয়ে দেখার কাজ করে থাকেন। ১৩ মার্চ তিনি ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেসে দুর্গাপুরে আসেন। স্টেশন থেকে কারখানার গাড়ি তাঁকে নিয়ে আসে। তিনি দুর্গাপুরে কাজ সেরে, বিকেলে চলে যান বড়জোড়ার প্ল্যান্টে। সেখানে কাজ সেরে রাতে সগড়ভাঙার একটি হোটেলে ওঠেন। ১৪ মার্চ সকালে ফের তিনি দুর্গাপুরের ইউনিটে যান। সন্ধ্যায় ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেসে তিনি বাড়ি ফিরে যান।
১৬ মার্চ তিনি জ্বরে পড়েন। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, সেই খবর পেয়ে তাঁর বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরিবারের তরফে ‘ইউরিনাল ইনফেকশন’ থেকে জ্বর এসেছে বলায় স্বস্তি পান কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রবিবার রাতে তাঁর ‘করোনা পজ়িটিভ’ হওয়ার খবর শুনেই চিন্তায় পড়ে যান কর্তৃপক্ষ।
সোমবার দুপুরে কারখানার প্ল্যান্ট ম্যানেজার সুন্দর সিংহ বলেন, ‘‘ওই ভদ্রলোকের সংস্পর্শে এসেছিলেন দু’জন গাড়ি চালক ও আরও আট জন। তাঁরা সুস্থ আছেন। স্বাস্থ্য দফতরে সকলের নাম ও ফোন নম্বর পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, দুই চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গিয়েছে, ওই আধিকারিক যখন এসেছিলেন তখন তাঁর কোনও উপসর্গ ছিল না। ‘জনতা কার্ফু’র দিন থেকেই প্ল্যান্টের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তাই সে দিন থেকে কর্মীরা প্ল্যান্টে ঢোকেননি। তা ছাড়া, নিয়মিত অফিস ঘর ‘স্যানিটাইজ়’ করা হচ্ছে। কারখানার আইএনটিটিইউসি কার্যকরী সভাপতি আশিস কেশ বলেন, ‘‘ওই ভদ্রলোক যখন কারখানায় এসেছিলেন, তখন সুস্থ ছিলেন বলে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জেনেছি। আশা করি, আর কারওর মধ্যে সংক্রমণ ছড়ায়নি।’’
বড়জোড়ার ইউনিট সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩ মার্চ বিকেলে কারখানার গিয়েছিলেন ওই প্রৌঢ়। বেশ কিছু উৎপাদিত পণ্য পরীক্ষা করে দেখেন। পাঁচ কর্মী তাঁকে সহযোগিতা করেছিলেন। কাজ শেষ হলে তিনি গাড়ি করে দুর্গাপুরে রওনা দেন। কারখানার বড়জোড়া ইউনিটের জেনারেল ম্যানেজার অশোক সিংহ বলেন, ‘‘উনি কারখানায় মিনিট দশেক ছিলেন বলে জেনেছি। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পরে, পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তাঁর সংস্পর্শে আসা ওই পাঁচ জনেরও নাম পাঠিয়ে দিয়েছে।’’