ফাইল চিত্র
রোগ ঠেকাতে বহু পরিবারকেই ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু তা না মেনেই কেউ বাইরে বেরিয়ে পড়ছেন, ‘উধাও’ কয়েকজন। বিযয়টি নিয়ে বৈঠক করেছে স্বাস্থ্য দফতর। স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। ওই সব পরিবারগুলির উপরে ‘নজর’ রাখার কথাও বলা হয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়ের আক্ষেপ, “শিক্ষিত মানুষজনই যদি স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ অবজ্ঞা করে দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো আচরণ করেন, তা হলে কী ভাবে আটকে রাখা সম্ভব!” জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অভিযোগ, পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ঠিকমতো নজরদারি করছেন না বলেই এই ঘটনা। প্রত্যেক পুরসভাকে এ নিয়ে চিঠিও পাঠিয়েছেন তাঁরা। স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ ও নির্দেশ পুঙ্খানুপুঙ্খ মানার কথা বলা হয়েছে।
পূর্ব বর্ধমানে ‘গৃহবন্দি’ বেশির ভাগ মানুষই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত। কয়েকজন বিদেশে চাকরি করেন। অভিযোগ, তাঁদেরই কয়েকজন নিয়ম মানছেন না। জেলা স্বাস্থ্য দফতর পুলিশকেও বিষয়টি জানিয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, “স্বাস্থ্য দফতর আমাদের কাছে যা সাহায্য চেয়েছে বা চাইছে সেগুলি মেটানোর চেষ্টা করছি। অ্যাম্বুল্যান্সও জোগাড় করে দিয়েছি। কিন্তু প্রতিটি ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ পুলিশের পাহারা বসানো অসম্ভব। তবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নজরে রাখার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’’
বর্ধমান পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গৃহবন্দি ৩৭ জনের মধ্যে পাঁচ জনের হদিশ মিলছে না। মেমারি ও কাটোয়াতে এমন দু’এক জনের খোঁজ মিলছে না। স্বাস্থ্য-কর্তাদের দাবি, বিমানবন্দরে পরীক্ষার পরেও বিদেশ থেকে আসা মানুষজনকে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকতেই হবে। ১৪ দিন বাড়ির বাইরে বার হওয়া তো দূর, পরিজনদের সংস্পর্শেও আসতে পারবেন না তাঁরা। নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে কথা বলতে হবে। স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত তাঁদের পরীক্ষা করতে যাবেন।
ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যকর্মীরা রিপোর্ট করেছেন, প্রথম দু’-একদিন তাঁদের পরামর্শ শোনা হচ্ছে। তার পরেই দেখা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট ঘর ছেড়ে বাড়ির বাইরে চলে যাচ্ছেন তাঁরা। কেউ কেউ বাজার, দোকানেও ঘুরে এসেছেন। কড়াকড়ি করায় কয়েকজন রাতারাতি বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন বলেও তাঁদের দাবি। পরিজনেরাও কিছু জানাচ্ছেন না। বর্ধমান পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক অমিত গুহ বলেন, “স্বাস্থ্যকর্মীদের রিপোর্ট পেয়েই প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর, পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’
এ ধরনের প্রবণতা দেখা দেওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে প্রশাসনের। স্বাস্থ্য কর্তারা জানাচ্ছেন, এক দিকে আশাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ চালানো শুরু করেছেন। সঙ্গে পুলিশও ভিন্-রাজ্য থেকে আসা বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে। সিএমওএইচ বলেন, “স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ মেনে চললে প্রত্যেকেরই সুবিধা।’’