Travel and Tourism

যাত্রায় রাশ, করোনায় মুশকিলে ভ্রমণ সংস্থা

১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিদেশ যাতায়াতে ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান ও কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২০ ০১:৫৩
Share:

ফাইল চিত্র

স্কুলের পরীক্ষা শেষ হচ্ছে। গরমও পড়তে শুরু করেছে। এই সময়ে নানা জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য ট্রেন-বিমানের টিকিট থেকে হোটেলের ঘর ‘বুক’ করেছিলেন অনেকে। কিন্তু করোনা-আতঙ্কে একের পরে এক ‘বুকিং’ বাতিল হচ্ছে। ভরা মরসুমে মাথায় হাত পড়েছে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলির।

Advertisement

১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিদেশ যাতায়াতে ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। নানা বিমান পরিষেবা সংস্থাও আপাতত বিদেশের নানা উড়ান বন্ধ রেখেছে। বর্ধমানের নানা ট্র্যাভেল বুকিং সংস্থার কর্তা-কর্মীদের দাবি, পরপর বিদেশযাত্রার বুকিং বাতিল হয়ে যাচ্ছে।

বর্ধমান শহরের পর্যটন ব্যবসায়ী বিক্রমাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মার্চের শেষ দিকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া-সহ চারটি জায়গায় যাওয়ার বুকিং বাতিল করতে হয়েছে। হোটেল থেকে বিমানের টিকিট, যাবতীয় বুকিং হয়ে গিয়েছিল। অগ্রিম নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মে মাসের মধ্যে আরও তিনটি যাত্রার বরাত মিলেছিল। সে সবও আপাতত স্থগিত। পুজো পর্যন্ত কার্যত সবই এখন বাতিল হয়ে গিয়েছে।’’ সব মিলিয়ে প্রায় চার লক্ষ টাকা লোকসান হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

Advertisement

শুধু বিদেশ নয়, কড়াকড়ি হয়েছে দেশের নানা পর্যটন কেন্দ্রেও। বর্ধমানের আর এক ব্যবসায়ী শান্তনু পাঁজা বলেন, ‘‘মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে দুবাই, তাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের পাঁচটি বুকিং ছিল। বাতিল হয়েছে। এ ছাড়া, হিমাচল প্রদেশের যাত্রাও বাতিল হয়েছে।’’ শান্তনুবাবুর আরও দাবি, গত সপ্তাহ দু’য়েকে তাঁর অফিসে কেউ কোথাও বেড়াতে যাওয়ার বিষয়ে খোঁজখবর নিতেও আসেননি। তাই সোমবার থেকে তিনি অফিসের দু’জন কর্মীকে ছুটি দিয়ে দিয়েছেন। বর্ধমানেরই ব্যবসায়ী সৌমাল্য রায়, সুমন্ত সোমেরা বলেন, ‘‘আতঙ্ক এতটাই যে দিঘা, মন্দারমণির বুকিংও বাতিল হচ্ছে।’’ অক্টোবরের আগে ব্যবসার হাল ফেরা মুশকিল, মনে করছেন তাঁরা।

কাটোয়ায় দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে ভ্রমণ সংস্থা চালাচ্ছেন সন্দীপন বন্দোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘রাজস্থান থেকে নেপাল, সব জায়গার যাত্রাই বাতিল করছেন পর্যটকেরা। আগামী মাসে সিমলা, নৈনিতাল যাওয়ার কথা ছিল বেশ কিছু পর্যটকের। কেউ ছ’মাস, কেউ দশ মাস আগে পরিকল্পনা করেছিলেন। আমরাও হোটেল, ট্রেন, বিমানের টিকিট বুক করেছিলাম। এখন বিপদে পড়েছি।’’ পুরীতে পর্যটক ঢোকার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। কাটোয়ার আর এক সংস্থার কর্ণধার তুহিন দাস বলেন, ‘‘এই মাসে অনেককে পুরী নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। যাত্রীরা যেমন আতঙ্কে ভুগছেন, আমরাও তাঁদের নিয়ে গিয়ে বিপদে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বেরোচ্ছি না‌।’’

কাটোয়ার আতুহাটপাড়ার বাসিন্দা মৈনাক পাল ও তাঁর স্ত্রী সৃজা পাল বলেন, ‘‘এ মাসেই পুরী যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এখন যাচ্ছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন