Coronavirus in West Bengal

শয্যা বাড়ানোর পরামর্শ কোভিড সমন্বয় কমিটির

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের কাছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ তলা নতুন ভবন তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। সেখানে ‘সেফ হাউস’ করা যায় কি না, সেই প্রস্তাব উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২০ ০০:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা-সংক্রমণ যে কোনও সময়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে, এ কথা মাথায় রেখে দুই বর্ধমানের স্বাস্থ্য দফতরকে পরিকাঠামো তৈরির পরামর্শ দিল ‘কোভিড-১৯’-এর জন্যে গঠিত সমন্বয় কমিটি। শুক্রবার রাতে ওই কমিটির সঙ্গে রাজ্য ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ‘ভিডিয়ো কনফারেন্স’ হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, সেখানে পশ্চিম বর্ধমানের জন্য নতুন ‘কোভিড’-হাসপাতাল গড়া, পূর্ব বর্ধমানে করোনা-আক্রান্তদের জন্য শয্যা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন কমিটির সদস্যেরা। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান এবং বৃহস্পতি ও শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমানের ‘কোভিড’ হাসপাতাল ও কয়েকটি ‘সেফ হাউস’ ঘুরে দেখেন ওই কমিটির সদস্যেরা।

Advertisement

ওই কমিটির কো-অর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসু বলেন, ‘‘আমরা পরিদর্শন করেছি। আলোচনায় বসেছিলাম। প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনার পরে, চূড়ান্ত রিপোর্ট স্বাস্থ্য দফতরে পাঠাব।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আগামী বুধবার ওই কমিটি পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে কী-কী উন্নতি প্রয়োজন, সে বিষয়ে পরামর্শ দিতে পারে। শুক্রবার রাতে আলোচনায় উঠে আসে, দুই বর্ধমানেই কোভিড-হাসপাতাল, ‘সারি’ ওয়ার্ড বা ‘সেফ হাউস’ থেকে নিয়মিত বর্জ্য নেওয়া হচ্ছে না। সে জন্যে নির্দিষ্ট ঠিকাদার সংস্থাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে বলা হয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার প্রবীর সেনগুপ্ত ও স্বাস্থ্য-কর্তারা সমন্বয় কমিটির সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছেন।

প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই কমিটির আশঙ্কা, করোনা-আক্রান্তের রেখচিত্র ধীরে-ধীরে উপরে উঠছে। যে কোনও মুহূর্তে ‘পিক পয়েন্ট’-এ উঠে স্থিতিশীল হবে। এখন যেখানে গড়ে দিনে দুই বর্ধমানেই আক্রান্তের সংখ্যা দৈনিক ৭০-৭৫-এর আশপাশে ঘোরাফেরা করছে, তখন তা পাঁচ-সাত গুণ বেড়ে যেতে পারে। সে জন্য এখন থেকে ‘ক্যুইক রেসপন্স টিম’-এর সংখ্যা বাড়ানো, চিকিৎসক-নার্স ও অন্য কর্মীর সংখ্যা বাড়িয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বৈঠকে জানানো হয়, আসানসোলের কাছে একটি পুরনো হাসপাতালকে করোনা-আক্রান্তদের জন্য তৈরি করার প্রয়োজন রয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের কাছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ তলা নতুন ভবন তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। সেখানে ‘সেফ হাউস’ করা যায় কি না, সেই প্রস্তাব উঠেছে।

Advertisement

জেলায় করোনা

মোট আক্রান্ত ১৩৬০ • অ্যাক্টিভ রোগী ৩৬৮

ইতিমধ্যে সুস্থ ৯৬৩ • মৃত ২৯

২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৭৬

• বর্ধমান শহর: ৪৭ • বর্ধমান ২ ব্লক: ৮

• বর্ধমান ১ ব্লক: ২ • কালনা ২ ব্লক: ৩

• কালনা ১ ব্লক: ১ • রায়না ১ ব্লক: ৩

• রায়না ২ ব্লক: ২ • গলসি ২ ব্লক: ২

• কেতুগ্রাম ১ ব্লক: ২ • আউশগ্রাম ২ ব্লক: ১

• ভাতার ব্লক: ১ • খণ্ডঘোষ ব্লক: ১

• মেমারি শহর: ১ • মেমারি ১ ব্লক: ১

• মন্তেশ্বর ব্লক: ১

**শুধু গত ২৪ ঘণ্টার হিসেব

(সূত্র: জেলা তথ্য সংস্কৃতি দফতর)

সিএমওএইচ (পূর্ব বর্ধমান) প্রণব রায় বলেন, ‘‘কোভিড হাসপাতালের শয্যা বাড়িয়ে ১৮৮ করা হয়েছে। নির্মীয়মাণ কৃষি ভবনে সেফ হাউসেও শয্যার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, নমুনা সংগ্রহের পরে রিপোর্ট যাতে দ্রুত মেলে, তা দেখতে বলা হয়েছে। শুক্রবার জেলায় ৭৫৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। ‘সেফ হাউসে’ থাকা আক্রান্তদের ‘একাকিত্ব’ কাটাতে টিভি-ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করারও প্রস্তাব উঠেছে। মনোবিদ দিয়ে মানসিক শক্তি বাড়ানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। এ দিনই ‘কোভিড- হাসপাতালে ভর্তি তাঁদের এক আধিকারিকের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না জানিয়ে জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন ডাকঘরের বর্ধমানের এক কর্তা। তাঁর চিকিৎসা যাতে ঠিকমতো হয়, তা দেখতে অনুরোধ করেছেন তিনি।

ওই কমিটির সদস্য বিজিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পূর্ব বর্ধমানের স্বাস্থ্য দফতর ভাল কাজ করছে। আগামী দিনের পরিকল্পনাও নিয়ে রেখেছে। মনোবিদ নিয়োগও হয়ে যাবে। করোনা-আক্রান্তেরা যতটা না শারীরিক আঘাত পাচ্ছেন, তার চেয়ে বেশি মানসিক আঘাত পাচ্ছেন। তা কাটাতে হবে।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন