মেমারিতে পাল্টে গেল ছবি
Coronavirus

করোনা-রোগীর হদিস মিলতেই রাস্তাঘাট ফাঁকা

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মেমারির সোমেশ্বরতলার এক যুবক কলকাতার মুকুন্দপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার আগে মঙ্গলবার করোনা-পরীক্ষার জন্যে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেমারি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২০ ০০:৫৭
Share:

মাত্র কয়েকঘণ্টার ব্যবধানেই বদলে গিয়েছে মেমারি শহরের ছবিটা।

Advertisement

‘লকডাউন’-এর মধ্যেও মেমারি শহর ও লাগোয়া এলাকায় ভিড়, জমায়েতের ছবিটা দিনদিন বাড়ছিল। পুলিশি ধরপাকড় বা রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখার মতো ‘শাস্তি’র ব্যবস্থা সত্ত্বেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি। কিন্তু শুক্রবার বিকেলে মেমারি শহরের এক যুবকের করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসার পরেই পাল্টা গেল ছবিটা। শনিবার শহরের রাস্তাঘাট সুনসান। দোকানপাট বন্ধ। বাজারে লোকজন নেই বললেই চলে। দরজা-জানলাও বন্ধ রেখেছেন অনেকে।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মেমারির সোমেশ্বরতলার এক যুবক কলকাতার মুকুন্দপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার আগে মঙ্গলবার করোনা-পরীক্ষার জন্যে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার আগে হাসপাতালে দু’বার পরীক্ষা হয়, কিন্তু রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসেনি। বুধবার ওই যুবক মেমারি ফেরেন। শুক্রবার রিপোর্ট এলে জানা যায়, তিনি করোনা-আক্রান্ত।

Advertisement

পুলিশ কর্তাদের অনেকের মতে, বারবার পরীক্ষা করার অর্থ, ওই যুবকের করোনা-উপসর্গ লক্ষ্য করছিলেন চিকিৎসকেরা। নমুনা সংগ্রহের পরে রিপোর্ট আসার আগেই কেন তাঁকে ওই বেসরকারি হাসপাতাল ছেড়ে দিল, তা নিয়ে বিস্মিত তাঁরা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানায়, ওই যুবকের নিকটাত্মীয়দের করোনা-পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা হবে কাল, সোমবার।

পুলিশ জানায়, মেমারির বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে ‘লকডাউন’ ভাঙার প্রবণতা দেখা যাচ্ছিল। তা আটকাতে প্রথমে ধরপাকড়, তার পরে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে ‘শাস্তি’ দেওয়া হয়। তাতেও ফল মিলছিল না বলে ‘নো এন্ট্রি’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাজারে যতটা সম্ভব কম লোকজন যায়, সে রকম ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। তার পরেও রাস্তাঘাটে লোকজন কমেনি। সম্প্রতি বেশ কিছু দোকানপাট খুলতেই রাস্তায় আরও বেশি লোকজন নামেন।

কিন্তু শুক্রবার বিকেল থেকে করোনা-মানচিত্রে মেমারির নাম যোগ হতেই রাস্তা ফাঁকা হয়ে গিয়েছে বলে জানায় পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমেশ্বরতলার বাজারে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ঝাঁপ খোলেননি। ওই রাস্তার একাধিক দোকান বন্ধ ছিল। কৃষ্ণবাজারের দোকানও খোলেনি। রাস্তাঘাটে লোকজনের যাতায়াত খুব কম চোখে পড়েছে। এ দিন বিকেলে মেমারি শহরে ‘ড্রোন’ উড়িয়ে কেউ কোথাও জমায়েত করেছে কি না, তা নজরদারি করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ওই এলাকাটি ‘গণ্ডিবদ্ধ’ করা হয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বেরনোয় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। এলাকার গোটা ৭৫ বাড়ির উপরে নজর রাখার জন্য পুলিশ কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে নিয়ে দল তৈরি করছে। ফোন নম্বর জানিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসের বরাত নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ ‘পিপিই’ পরে এলাকায় গিয়ে সে সব পৌঁছে দিচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর জানায়, পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই এলাকার প্রতিটি বাড়িতে দু’বার করে গিয়ে সদস্যদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজ নেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন