COVID-19

অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহে ক্লান্তিহীন হরজিৎ

হরজিতের দাবি, এখনও পর্যন্ত ৪৫ জন রোগীকে অক্সিজেন দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

বিপ্লব ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২১ ০৬:০৪
Share:

এ ভাবেই মোটরবাইকে চলছে প্রচারও। নিজস্ব চিত্র।

করোনা রুখতে জারি হয়েছে সরকারি বিধিনিষেধ। বন্ধ কাজকর্ম। গ্যারাজে পড়ে রয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডার। প্রয়োজন হলেই করোনা রোগীর বাড়িতে সেই সিলিন্ডার নিয়ে হাজির হচ্ছেন কাঁকসার পানাগড়ের বাসিন্দা হরজিৎ সিংহ নিক্কি। তাঁর নিজের একটি মোটরবাইক এবং একটি গাড়ি রয়েছে। সেগুলিতে সিলিন্ডার চাপিয়ে রোগীর বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। বিনামূল্য়ে দিচ্ছেন অক্সিজেন পরিষেবা।

Advertisement

হরজিৎবাবুর একটি গ্যারাজ রয়েছে। সেখানে জল ও তেলের ট্যাঙ্ক মেরামত করা হয়। সেই কাজে ঝালাইয়ের জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। করোনা-সঙ্কটে সেই অক্সিজেন তিনি পৌঁছে দিচ্ছেন করোনা রোগীদের বাড়িতে। ২০১৮ পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএমের টিকিটে লড়ে জয়ী হয়েছিলেন হরজিৎবাবু। এখন তিনি কাঁকসা পঞ্চায়েতের সদস্য। গত বছর লকডাউন চলাকালীন দাঁড়িয়েছিলেন গরিবের পাশে। গাড়িকে অ্যাম্বুল্যান্সে পরিণত করে বিনামূল্যে পরিষেবা দিয়েছিলেন। ব্যবস্থা করেছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকদের থাকা ও খাওয়ার। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় জনজীবন যখন কার্যত বিপর্যস্ত, তখন ফের ময়দানে নেমেছেন হরজিৎ। তাঁর কথায়, ‘‘অক্সিজেনের আকাল পড়েছে সব জায়গায়। অনেক রোগীকেই বেশি দামে অক্সিজেন কিনতে হচ্ছে। এ সব দেখে স্থির থাকতে পারিনি।’’ গ্যারাজে থাকা অক্সিজেন সিলিন্ডার রোগীদের দেওয়ার ইচ্ছার কথা কাঁকসা থানা ও স্বাস্থ্য দফতরে জানিয়েছিলেন তিনি। অনুমতি মিলতেই পরিষেবা দেওয়া শুরু করেছেন।

হরজিৎবাবু জানান, গ্যারাজে চারটি সিলিন্ডার ছিল। কিনেছেন আরও দশটি। বন্ধুবান্ধবেরাও তাঁকে কয়েকটি সিলিন্ডার দিয়েছেন। সব মিলিয়ে এখন তাঁর কাছে রয়েছে ২০টি সিলিন্ডার। সেগুলি সব সময় ভর্তি রাখা হয়। হরজিতের দাবি, এখনও পর্যন্ত ৪৫ জন রোগীকে অক্সিজেন দিয়েছেন তিনি। পানাগড়-সহ কাঁকসার বিভিন্ন এলাকা এবং বুদবুদের অনেকেই তাঁর কাছে অক্সিজেন চেয়ে ফোন করছেন। কাউকেই নিরাশ করছেন না তিনি। হরজিৎবাবু বলেন, ‘‘এ এক দুঃসময়। অক্সিজেনের কালোবাজারি চলছে। এরই মধ্যে মানুষকে সাহায্য করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’’ এই কাজে তাঁকে সাহায্য করছেন মাঙ্গা সিংহ, সোনু সিংহ, অনিল ঠাকুর ও সুনীল পণ্ডিতের মতো বন্ধুরা। তাঁরা বলেন, ‘‘নিক্কির কাজে হাত লাগাতে পেরে খুব ভাল লাগছে।’’

Advertisement

হরজিৎবাবুর কাছে অক্সিজেন চেয়েছিলেন পানাগড়ের পূরব দাস ও গৌতম লামা। তাঁরা বলেন, ‘‘অক্সিজেনের জন্য নানা জায়গায় ছুটতে হয়েছে। হরজিৎবাবু কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন।’’ তবে অক্সি-ফ্লো মিটার পর্যাপ্ত না থাকায় হরজিৎবাবু সমস্যায় পড়েছেন। তাঁর কাছে ওই যন্ত্র রয়েছে মাত্র পাঁচটি। তিনি বলেন, ‘‘অক্সি-ফ্লো মিটার না থাকায় এক দিনে বেশি মানুষের অক্সিজেন প্রয়োজন হলে দিতে পারছি না। এটাই আক্ষেপ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement