COVID-19

থানায় জীবাণুনাশক স্প্রে করছেন তিন জন

ব্যবসার পাশাপাশি, মাস্ক বিলি এবং বিনা মূল্যে শহরের বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়িতে জীবাণুনাশকও ছড়াচ্ছেন বছর ৩৫-এর শুভ। সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রী রমা ও পাড়ারই যুবক অভিজিৎ অধিকারী।

Advertisement

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২১ ০৫:৪৭
Share:

বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর থানায় শুভ চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র।

‘লকডাউনে’র সময় মহারাষ্ট্র থেকে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের জব্বরপল্লিতে বাড়ি ফিরে ‘মাস্ক’-এর ব্যবসা শুরু করেছেন শুভ চক্রবর্তী। ব্যবসার পাশাপাশি, মাস্ক বিলি এবং বিনা মূল্যে শহরের বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়িতে জীবাণুনাশকও ছড়াচ্ছেন বছর ৩৫-এর শুভ। সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রী রমা ও পাড়ারই যুবক অভিজিৎ অধিকারী।

Advertisement

সম্প্রতি ফরিদপুর (লাউদোহা) থানা, প্রান্তিকা ফাঁড়ি ও বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর থানার আনাচ-কানাচে জীবাণুনাশক ছড়ান শুভ-সহ ওই তিন জন। শুভ বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় শাড়ির ব্যবসা ছিল। লকডাউনে তা লাটে ওঠে। বাড়ি ফিরে প্রথমে ধূপকাঠি, আর এখন মাস্কের ব্যবসা করি। মোটামুটি ব্যবসা চলছে।’’

ব্যবসা মোটামুটি দাঁড় করানোর পরেই শুভর মাথায় ঢোকে, ‘কোভিড-যোদ্ধা’দের পাশে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশকর্মীরা বাজার-হাটে কাজ করছেন। আদালতে যাতায়াত করছেন। ওঁদের সংক্রমণের চূড়ান্ত আশঙ্কা রয়েছে। তাই, ঠিক করি, ওঁদের কর্মস্থলগুলিতেই আগেভাগে জীবাণুনাশক ছড়াব। শহরের সব থানায়, পরে সরকারি অফিস, সাংবাদিকদের ক্লাব, সর্বত্র এই কাজ করব।’’ প্রথম দিন একাই বেরিয়েছিলেন। পরে যোগ দেন স্ত্রী রমা ও পাড়ার যুবক অভিজিৎ। রমা বলেন, ‘‘বাড়িতে বছর ১৩-র এক ছেলে রয়েছে আমাদের। ওকে রেখে বেরিয়েছি। করোনাকে ভয় পেলে হবে না। লড়তে হবে, তা থেকেই আমাদের এই কাজ।’’ এক সময় একটি দোকানে কাজ করা, বর্তমানে কর্মহীন বছর ২৮-এর যুবক অভিজিৎও একই কথা বলেন।

Advertisement

কিন্তু কোথা থেকে আসছে এই খরচ? মাস্ক, গ্লাভস পরে জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজ করতে করতেই অভিজিৎ বলেন, ‘‘পুরোটাই নিজের পকেট থেকে। আসলে খরচ একেবারে কম। এক পরিচিতের থেকে স্প্রে করার যন্ত্র ধার নিয়েছি। বাজার ঘুরে সস্তায় জীবাণুনাশক ও মাস্ক জোগাড় করেছি।’’ তিন জনের এই কাজকে ‘উদাহরণযোগ্য’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন দুর্গাপুর থানার আধিকারিক রাজশেখর মুখোপাধ্যায়, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের কোভিড ম্যানেজমেন্ট দলের কো-অর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসুরা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) অশ্বিনীকুমার মাজি বলেন, ‘‘এ ভাবে জনসাধারণ যদি এগিয়ে আসেন, কোভিডের সঙ্গে লড়াইটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।’’

এ দিকে, আজ, শুক্রবার অণ্ডালের বিভিন্ন ট্র্যাফিক পোস্ট জীবাণুনাশক ছড়াবেন, জানান শুভ। তাঁর আহ্বান, ‘‘আমরা এখন তিন জন। তিন থেকে ৩০ হোক, এটাই চাই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement