দূরত্ববিধি? আসানসোলে বিজেপির সভা। নিজস্ব চিত্র
‘গণতন্ত্র বাঁচাও’, শীর্ষক কর্মসূচির আয়োজন করতে গিয়ে শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল ও দুর্গাপুরে স্বাস্থ্য-বিধি না মানায় অভিযুক্ত বিজেপি।
এ দিন সকালে আসানসোলের রবীন্দ্র ভবন চত্বরে বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইর নেতৃত্বে শুরু হয় জমায়েত। সেখানে যোগ দেন দলের রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। সমাবেশ স্থলে তখন থিকথিকে ভিড়। দূরত্ববিধি না মানার পাশাপাশি, নেতা-কর্মীদের একাংশ মাস্কও পরেননি বলে অভিযোগ। কয়েক হাজার মানুষের ভিড়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে বার্নপুর রোড। ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া যানবাহনগুলিকে পুলিশ লাইনের রাস্তা ধরে ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ।
এ দিন রাজুবাবু ফের বলেন, ‘‘তৃণমূলের সঙ্গে মিলেমিশে পুলিশ এই রাজ্যে গুণ্ডারাজ চালাচ্ছে।’’ পাশাপাশি, তিনি পুলিশ সম্পর্কে আরও বেশ কিছু ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। সরব হন আসানসোল পুরসভার মেয়র তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিরুদ্ধেও। জিতেন্দ্রবাবু যদিও বলেন, ‘‘ওদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে সাধারণ মানুষকে আরও বিপদে ফেলছে বিজেপি।’’
সমাবেশের শেষে মহকুমাশাসকের (আসানসোল) কার্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। দেওয়া হয় প্রতিবাদপত্রও। মহকুমাশাসকের (আসানসোল) দেবজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপির অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
এ দিকে, দুর্গাপুরেও বিজেপির ওই কর্মসূচিতে স্বাস্থ্য-বিধি না মানার অভিযোগ উঠেছে। মহকুমাশাসকের (দুর্গাপুর) কার্যালয়ের কাছে হওয়া সভায় বিজেপি নেতা তথা ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার জাতীয় সম্পাদক সৌরভ শিকদার। তাঁর দাবি, ‘‘বিজেপিকে এখন দু’টি ভাইরাসের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে। করোনা ভাইরাস এবং তৃণমূল ভাইরাস। ২০২১ সালে আমাদের সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দু’টি ভাইরাসকে উৎখাত করার লড়াই আমাদের শেষ হবে।’’ সৌরভবাবুও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হন। যদিও তৃণমূলের জেলার অন্যতম মুখপাত্র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্যে গণতন্ত্র আছে বলেই বিজেপি আন্দোলন কর্মসূচি করতে পারছে। জোর গলায় শাসকদলের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারছে।’’
স্বাস্থ্য-বিধি না মানার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাজুবাবু বলেন, ‘‘আমরা এত সমর্থককে আনতে চাইনি। কিন্তু পুলিশ ও তৃণমূলের জুলুমের জবাব দিতেই মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েত।’’ তবে বিজেপির চিকিৎসক সেলের রাজ্য সদস্য প্রভাস মাজি বলেন, ‘‘মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদানের জন্যই কিছুটা বেনিয়ম হয়েছে।’’ দুর্গাপুরে দলের কর্মীরা সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে, মাস্ক পরেই সভায় যোগ দেন বলে দাবি করেন বিজেপি নেতা ভোলা সাউ।
বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও পদক্ষেপ করা হবে কি না, সে বিষয়ে পুলিশ-প্রশাসনের কোনও কর্তা মুখ খুলতে চাননি।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)