নিজের জোরে ভোটে লড়ার ডাক নেতৃত্বের

শুক্রবার শুরু হওয়া তিন দিনের সম্মেলনে অচিন্ত্য মল্লিকই ফের সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৫
Share:

বর্ধমানে সম্মেলনের শেষ দিনে সিপিএম নেতারা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

আন্দোলন করার মতো ‘অনুকূল’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, আগের দিন সম্মেলনে দাবি করেছিলেন প্রতিনিধিরা। রবিবার বর্ধমানে দলের জেলা সম্মেলনের শেষ দিনে রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের উপস্থিতিতে সিপিএম নেতৃত্ব জানিয়ে দিলেন, পঞ্চায়েত ভোটে পুলিশ, কেন্দ্রীয় বাহিনী বা নির্বাচনের কমিশনের ভরসায় নয়, নিজেদের সংগঠনের উপরে নির্ভর করে লড়াই করতে হবে। সংগঠন বাড়াতে প্রয়োজনে প্রতিরোধের রাস্তায় যাওয়ার নির্দেশও দিলেন জেলা নেতৃত্ব।

Advertisement

শুক্রবার শুরু হওয়া তিন দিনের সম্মেলনে অচিন্ত্য মল্লিকই ফের সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হলেন। জেলার নেতা তথা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মদন ঘোষ এ দিন সম্মেলনে জবাবি ভাষণের পরে অচিন্ত্যবাবুর নাম প্রস্তাব করেন। কমিটির সদস্যেরা তা সমর্থন করেন। জেলা ভাগের পরে ৩৮ জনের জেলা কমিটি গঠন হয়েছিল। এই সম্মেলনের পরে সাত জন মহিলা-সহ পঞ্চাশ জনের কমিটি গঠন করা হল। এ ছাড়া আমন্ত্রিত সদস্য হলেন ৫ জন।

সিপিএম সূত্রে জানা যায়, এ দিন দুপুরে জবাবি ভাষণে সূর্যকান্তবাবু জানান, পঞ্চায়েত ভোটের প্রতিটি আসনে লড়তে হবে। সে জন্য পুলিশ, কেন্দ্রীয় বাহিনী বা নির্বাচন কমিশনের উপরে ভরসা করলে চলবে না। বুথভিত্তিক সংগঠন তৈরি করে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে হবে। শুক্রবার প্রতিনিধিরা দাবি করেছিলেন, গলসি, বর্ধমান ১, খণ্ডঘোষ-সহ বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের একঘরে করে দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। অনেক জায়গায় সেই দুষ্কৃতীরা গ্রামছাড়া। পুলিশের কাছে যাওয়ার ক্ষমতাও নেই তাদের। জেলা সম্পাদক অচিন্ত্যবাবুর বক্তব্য, “এই সব ছোট-ছোট ঘটনার মধ্যে দিয়ে প্রতিবাদের স্ফুলিঙ্গ তৈরি হচ্ছে। তা আগামী দিনে ছড়িয়ে পড়বে। সে জন্য আমাদের মাঠে-ময়দানে আন্দোলন, জনসংযোগ তৈরি করতে হবে।” সূর্যকান্তবাবু প্রতিনিধিদের প্রতি সন্ধ্যায় গরিব পাড়ায় গিয়ে জনসংযোগ গড়ার নির্দেশ দেন।

Advertisement

সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। জবাবে দলের সম্পাদক জানান, নির্দিষ্ট কর্মসূচির উপরে নির্ভর করে আসন সমঝোতা বা মোর্চা গঠন হতে পারে। পরে তিনি প্রতিনিধিদের বলেন, “আমরা যেখানে দুর্বল সেখানে বাম-সহযোগীদের সাহায্য করব। সেটাও না হলে তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে যে দল থাকবে, তাকে সমর্থন করা হবে।”

এ দিন প্রতিনিধিদের একাংশ দাবি করেন, বামপন্থী জনপ্রতিনিধিদের কেউ-কেউ শাসকদলের কাছে মাথা নত করছেন। তা আটকাতে দলের নিচুতলা থেকে লড়াই করে এসেছেন, এমন নেতা-কর্মীদের নির্বাচিত করার প্রস্তাব উঠেছে। মাঠে-ময়দানে শাসকদলের সন্ত্রাসের মুখে পড়তে হচ্ছে বলেও অনুযোগ করেন অনেকে। জেলা সিপিএম নেতা তথা কৃষকসভার রাজ্য সম্পাদক অমল হালদারের পরামর্শ, “মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধের রাস্তায় যেতে হবে। সাম্প্রতিক কালে এই জেলায় এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটেওছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন