সাইবার প্রতারণায় ভিন রাজ্যের দলের খোঁজ

সেলের আধিকারিকদের দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে, ভিন রাজ্য, বিশেষত বিহারের একটি দল এই প্রতারণা চক্রের পিছনে রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০২:৫৮
Share:

সাইবার ক্রাইম নিয়ে সচেতনতা সভা, কালনায়। নিজস্ব চিত্র

জমানো টাকা হঠাৎই উধাও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে। মোবাইলে দফায়-দফায় বার্তা আসছে, তুলে নেওয়া হয়েছে টাকা। কিন্তু, কী ভাবে সেটা ঘটছে, তা তাঁর জানাই নেই বলে অভিযোগ করছেন গ্রাহকেরা। একের পর এক এই ধরনের সাইবার অপরাধের অভিযোগ উঠছে জেলায়। প্রশাসনের জেলা সাইবার সেল জানায়, প্রতারকদের খপ্পর থেকে গ্রাহকদের বাঁচতে জোরকদমে প্রচার শুরু করা হয়েছে।

Advertisement

গলসির পুরসার দিনমজুর কাঞ্চন দাস স্থানীয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে প্রায় ৬৩ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন। কষ্টে জমানো ওই টাকায় বাড়ি তৈরির ইচ্ছে ছিল তাঁর। কিন্তু তিনি পুলিশ ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন, ৪৫ দফায় প্রতারকেরা অ্যাকাউন্ট থেকে সেই টাকা তুলে নিয়েছে। সম্প্রতি এমন প্রতারণার অভিযোগ করেছেন কালনা ২ ব্লকের মাতিশ্বর গ্রামের দীনবন্ধু বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী বেলা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে অভিযোগ করেন, অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ২০ হাজার টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে। মন্তেশ্বরের এক চাষিকে ফোন করে নানা কৌশলে কিছু তথ্য হাতিয়ে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকেও প্রায় ৪৫ হাজার টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতারকদের বিরুদ্ধে। তদন্তে নেমে জেলা সাইবার সেল তাঁর ১২ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে।

এই ধরনের প্রতারণা ঠেকাতে জেলায় এই সাইবার সেল তৈরি হয়েছে। সেলের আধিকারিকদের দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে, ভিন রাজ্য, বিশেষত বিহারের একটি দল এই প্রতারণা চক্রের পিছনে রয়েছে। তারা নানা ভাবে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে আর এক দলের কাছে পাঠিয়ে দেয়। তারা সেই টাকা বিভিন্ন বিল মেটানোর কাজে লাগাচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা সাইবার সেল জেনেছে, গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তোলা টাকায় মহারাষ্ট্রে বিদ্যুতের বিল মেটানো হয়েছে। বিশদে জানতে ইতিমধ্যে সাইবার সেলের তরফে মহারাষ্ট্রের বিদ্যুৎ বোর্ডে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে তথ্য মিললে অপরাধীদের চিহ্নিত করা সহজ হবে বলে মনে করছেন আধিকারিকেরা।

Advertisement

এর পাশাপাশি গ্রাহকদের সচেতন করতে প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে। স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে প্রচার শুরু করেছে জেলা সাইবার সেল। কালনা, কাটোয়া, ভাতার, গলসি, রায়নার কলেজগুলিতে সভা করা হয়েছে। নাদনঘাটে স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে সভা হয়েছে। সাইবার সেলের আধিকারিক এক স্নেহাশিস চৌধুরী কালনা কলেজে সচেতনতা প্রচারে এসে জানান, গ্রাহকদের মনে রাখতে হবে, কোনও তথ্যের জন্য ব্যাঙ্ক কাউকে ফোন করে না। ব্যাঙ্কের নাম করে কেউ ফোন করলেই বুঝতে হবে সে প্রতারক। এ ব্যাপারে গ্রাহকেরা সচেতন হলেই ৯০ শতাংশ অপরাধ ঠেকানো সম্ভব হবে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও পেজ খুলে সতর্কতার বিষয়ে নানা পরামর্শ দিচ্ছে সাইবার সেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন