নগদে টান, ঝিমিয়ে খেজুর গুড়ের বাজার

শীত মানেই বাজারে খেজুর গুড়ের ব্যাপক চাহিদা থাকে। বাড়তি কিছু আয় হবে ভেবে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির গোড়া পর্যন্ত সময়টার দিকে তাকিয়ে থাকেন কাটোয়ার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫০ ঘর বাসিন্দা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৫
Share:

চরবিকিহাটে চলছে খেজুর গুড় তৈরি। নিজস্ব চিত্র।

শীত মানেই বাজারে খেজুর গুড়ের ব্যাপক চাহিদা থাকে। বাড়তি কিছু আয় হবে ভেবে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির গোড়া পর্যন্ত সময়টার দিকে তাকিয়ে থাকেন কাটোয়ার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫০ ঘর বাসিন্দা। কিন্তু এ বার সে গুড়ে বালি। তাঁদের দাবি, এ বার নোট-বাতিলের চোট ও তেমন ঠান্ডা না পড়ায় উভয় সঙ্কটে পড়তে হয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়ার দাঁইহাট, বিকিহাট, মণ্ডলহাট, চরবিকিহাটে খেজুর গুড়ের কারিগর রয়েছেন। তাঁরা গাছ ‘লিজ’ নিয়ে বা নিজের বাড়ির গাছেই হাঁড়ি বেঁধে খেজুর রস সংগ্রহ করেন। চরবিকিহাটের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস যেমন এই মরসুমে প্রায় ৪০ হাজার টাকায় ১৮০টি গাছ লিজ নিয়েছেন। তিনি জানান, সাধারণ ভাবে হাঁড়ি প্রতি ১০ লিটার করে রস মিললেও এ বার তার পরিমাণ অর্ধেক। ওই এলাকারই ঠাকুরদাস মণ্ডল জানান, প্রায় ৪০০টি গাছ থেকে প্রতি দিন আড়াইশো লিটারের মতো খেজুর রস মিলছে। গত বার যা ছিল প্রায় তিনশো লিটারের কাছাকাছি।

সঙ্কট তৈরি হয়েছে পাটালি, ঝোলাগুড়ের ক্ষেত্রেও। কারিগরেরা জানান, ভাল ঠান্ডা পড়লে ১০ লিটার খেজুর রস থেকে আড়াই কেজির মতো পাটালি মিললেও এই মরসুমে এখনও পর্যন্ত তার পরিমাণ মাত্র এক কেজি। ঝোলাগুড়ের উৎপাদনও লিটার প্রতি পাঁচশো গ্রাম করে কম।

Advertisement

গুড়ের উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্কট তৈরি হয়েছে বাজার নিয়েও। দাঁইহাটের এক খেজুর গুড় বিক্রেতা জানান, সাধারণ ভাবে কাটোয়ার পাইকারি বাজারে কেজি পিছু ৬০ টাকা দর থাকে। এ বার দাম তেমন না কমলেও বাজারে চাহিদা বেশ কম বলে দাবি প্রতি বছর বর্ধমানের বাজারে গুড় রফতানি হলেও এ বার তা বন্ধ। কেন? এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত নিতীশ মণ্ডল, ভগীরথ মণ্ডলেরা জানান, গত বারের তুলনায় এ বার গুড় রফতানি কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ। বর্ধমানের খুচরো বাজারে খেজুর গুড়ের দর প্রায় ১৫০ টাকা। বিক্রেতাদের মতে, ক্রেতার হাতে নগদ টাকার পরিমাণ কম থাকায় এ বারে এখনও ঝিমিয়ে রয়েছে খেজুর গুড়ের বাজার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন