কার্ড বাড়িতে, কেনাকাটা ভিন্-শহরে

এটিএম কার্ড রয়েছে বাড়িতে। অথচ মোবাইলে ওটিপি আসছে। প্রথমে বিষয়টিকে তেমন ‘পাত্তা’ দেননি দুর্গাপুরের গোপালমাঠের বরুণ রায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

এটিএম কার্ড রয়েছে বাড়িতে। অথচ মোবাইলে ওটিপি আসছে। প্রথমে বিষয়টিকে তেমন ‘পাত্তা’ দেননি দুর্গাপুরের গোপালমাঠের বরুণ রায়। কিন্তু ব্যাঙ্কে গিয়ে খোঁজ নিতেই দেখেন, উধাও প্রায় সাত হাজার টাকা। অ্যাকাউন্টে রয়েছে মাত্র ১৩২ টাকা।

Advertisement

একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে বরুণবাবুর। তিনি জানান, ১০ ও ১১ অক্টোবরে ধাপে ধাপে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কাটা হয়েছে। এটিএম কার্ড তাঁর কাছেই রয়েছে। কাজেই মোবাইলে ওটিপি এলেও তেমন গা করেননি তিনি। কিন্তু দু’দিন ধরে পর পর ওটিপি আসায় তাঁর সন্দেহ বাড়ে। বরুণবাবু জানান, ব্যাঙ্কে গিয়ে যোগাযোগ করে তিনি জানতে পারেন, মুম্বই ও বেঙ্গালুরু থেকে অনলাইন কেনাকাটা করা হয়েছে তাঁর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে। প্রথমে ১২০০ টাকা সরানো হয়েছে। পরে আরও সাত বার টাকা কাটা হয়েছে। এই ‘প্রতারণা’ এক বার বাদে প্রতি ক্ষেত্রেই মুম্বই থেকে করা হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যাঙ্ক ও থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন বরুণবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘মাত্র ১৩২ টাকা ৩৭ পয়সা পড়ে রয়েছে অ্যাকাউন্টে। আরও বেশি টাকা থাকলে সেটাও যেত। ব্যাঙ্কে এটিএম কার্ড ‘ব্লক’ করা হয়েছে। আমি খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’’ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।

বরুণবাবু জানিয়েছেন, বাজার করার সময় না হলেও তিনি পেট্রল পাম্পে তেল কেনা, বাসের টিকিট কেনার মতো ছোটখাটো কাজে এটিএম কার্ড ব্যবহার করে থাকেন। তিনি বলেন, ‘‘ওটিপি ছাড়াও যে এ ভাবে প্রতারণার শিকার হতে হবে ভাবিনি। কার্ডের পিন নম্বর দিইনি কাউকে। ওটিপি-ও কেউ জিজ্ঞাসা করেনি। তা সত্ত্বেও কী ভাবে এমন প্রতারিত হলাম, বুঝতে পারিনি।’’

Advertisement

সাইবার অপরাধের তদন্তে যুক্ত পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু ‘ওয়েবসাইট’ আছে, যেখান থেকে অনলাইন কেনাকাটা করতে গেলে কার্ডের নম্বর, মেয়াদ শেষের তারিখ, ‘সিভিভি’ নম্বর দিলেই চলে। ‘পিন’ বা ‘ওটিপি’ ছাড়াই সেই সব সাইটে কেনকাটা করা যায়। ফলে কার্ডের তথ্য জানা থাকলেই যে কেউ কার্ডটি ব্যবহার করে কেনাকাটা সেরে ফেলতে পারে। অনেকেই কার্ড ‘সোয়াইপ’ করে বিভিন্ন জায়গায় বিল মেটান।

কার্ডের তথ্য হাতানোর জন্য দুষ্কৃতীরা অনেক সময়ে ‘সোয়াইপ মেশিনে’র মতো হুবহু একই রকম দেখতে ‘কার্ড কপিয়ার’ ব্যবহার করে থাকে। সেই যন্ত্রে কার্ডটি একবার ঘষলেই কার্ডের যাবতীয় তথ্য ওই যন্ত্রে চলে যায়। সেই তথ্য ব্যবহার করে কার্ডের প্রতিলিপি তৈরি করা সম্ভব। এরপরে তা আসল কার্ডের মতোই ব্যবহার করা সম্ভব। বরুণবাবুর ক্ষেত্রেও সম্ভবত তেমনই কিছু হয়ে থাকতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন