বক্তা প্রদীপ রায়। নিজস্ব চিত্র
চর্চা চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। ইঙ্গিত মিলেছিল তাঁর কথাতেও। এ বার কাটোয়ায় তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান মঞ্চে দেখা গেল দাঁইহাটের সিপিএমের উপ-পুরপ্রধান প্রদীপ রায়কে। দলবদল করেছেন কি না, সে ব্যাপারে প্রদীপবাবু কোনও মন্তব্য না করলেও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, তিনি গত সপ্তাহেই তাঁদের দলে যোগ দিয়েছেন।
সিপিএমের দখলে থাকা দাঁইহাট পুরসভায় ১৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯টিতে সিপিএম, ৪টিতে তৃণমূল এবং একটিতে বিজেপি ক্ষমতায় ছিল। সম্প্রতি চার জন সিপিএম কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। তার পরেই পুরপ্রধান বিদ্যুৎবরণ ভক্তের অপসারণের দাবিতে চিঠি জমা দেন সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর। সেই সময় থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়, ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা উপ-পুরপ্রধান প্রদীপবাবুও দলবদল করতে পারেন। পুরপ্রধানের অনুপস্থিতিতে ওই অপসারণের চিঠি গ্রহণ করে প্রদীপবাবু বলেছিলেন, ‘‘দাঁইহাটের উন্নয়ন হোক, সেটাই চাই। হয়তো তিন বছরে এই পুরবোর্ড সেই উন্নয়ন করতে পারেনি। রাজ্যে অন্য পুরসভায় তৃণমূলের হাত ধরে যখন উন্নয়ন হচ্ছে, তখন আশা করা যায় এখানেও তাই হবে।’’
এ দিন কাটোয়া পুরসভা আয়োজিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মঞ্চে হাজির হয়ে বক্তৃতা করেন প্রদীপবাবু। তবে কোনও রাজনৈতিক মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রীতি ও সৌভ্রার্তৃত্ব বজায় রাখতে কাটোয়া পুরসভার এমন প্রতিযোগিতা আয়োজনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।’’ দলবদল নিয়ে পরেও কিছু বলতে চাননি তিনি।
কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেন, গত সপ্তাহে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন প্রদীপবাবু। দলে যোগ দিতে চেয়ে তাঁর কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। কাটোয়ার সিপিএম নেতা তথা দলের জেলা কমিটির সদস্য অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘দাঁইহাটের উপ-পুরপ্রধান দলবদল করেছেন বলে শুনিনি। তবে ওই পদে থাকার কারণে সরকারি অনুষ্ঠানে তিনি যেতেই পারেন।’’
দাঁইহাট পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরপ্রধানকে অপসারণের দাবিতে চিঠি দেওয়ার পরে কাউন্সিলরদের বৈঠকে ডাকার সময়সীমা শেষ হচ্ছে আজ, সোমবারই। বিদ্যুৎবাবু অবশ্য ইতিমধ্যে পুরপ্রধান পদ থেকে সরতে চাওয়ার কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। চলতি সপ্তাহে উপ-পুরপ্রধান প্রদীপবাবুই ওই বৈঠক ডাকতে পারেন বলে শাসক দল সূত্রের খবর।