নিয়ামতপুরে ঘটনাস্থল। নিজস্ব চিত্র
রাতে মোটরবাইকে বেরিয়েছিলেন তিন তরুণ। হেলমেট ছিল না কারও মাথায়। ট্রাকের সঙ্গে মোটরবাইকের মুখোমুখি ধাক্কায় মৃত্যু হল তিন জনেরই। রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ কুলটির নিয়ামতপুরে জিটি রোডে দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃতদের বাড়ি বরাকরের মাকুড়িয়া পাড়ায়। পুজোর মুখে এমন ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে বরাকর থেকে মোটরবাইকে আসানসোলের দিকে যাচ্ছিলেন শ্যাম বাউড়ি (২০) সুজন বাউড়ি (২১) ও রূপা চট্টোপাধ্যায় (১৮)। কুলটি থেকে নিয়ামতপুরে ঢোকার মুখে পেট্রোল পাম্পের আগে বরাকরের দিকে যাওয়া বালি বোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় মোটরবাইকটির। বিকট শব্দ পেয়ে কুলতড়া এলাকার বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পৌঁছয় নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশও। রক্তাক্ত অবস্থায় তিন জনকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। ট্রাকের চাকার তলায় দুমড়ে-মুচড়ে পড়েছিল মোটরবাইকটি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তিন জনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
রবিবার রাতে এই দুর্ঘটনার পরে বরাকরের মাকুড়িয়া পাড়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উৎসবের মরসুমের ঠিক আগে এমন ঘটনায় শোকস্তব্ধ এলাকাবাসী। মৃত তরুণদের মধ্যে কেউ বাসের কন্ডাক্টর হিসেবে কাজ করতেন, কেউ দোকানের কর্মী ছিলেন। তিন জনের পরিবারেরই আর্থিক অবস্থা বিশেষ ভাল নয়। সোমবার দুপুরে ময়না-তদন্তের পরে দেহ মাকুড়িয়া পাড়ায় আনা হয়। এলাকার বাসিন্দারা চাঁদা তুলে সৎকারে সাহায্য করেন।
মৃত রূপা চট্টোপাধ্যায়ের নিকটাত্মীয় লক্ষীকান্ত চট্টোপাধ্যায় জানান, রাতে তিন জন কোথায় যাচ্ছিলেন, তা তাঁরা জানেন না। শ্যাম বাউড়ির মামা স্বপন বাউড়ি বলেন, ‘‘আমরা ওকে অত রাতে বাইরে যেতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু কথা শোনেনি। এমন বিপর্যয় ঘটে গেল, ভাবতেও পারছি না!’’ তিন জন যে মোটরবাইকে ছিলেন সেটি তাদের কারও নয়। মোটরবাইকটি কার, তা তাঁদের পরিবারের লোকজনও পুলিশকে জানাতে পারেননি। পুলিশ জানায়, সেটির মালিক কে, তা জানার চেষ্টা চলছে। ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। তবে চালক ও খালাসি পলাতক। ট্রাক মালিকেরও খোঁজ চলছে।