অচলাবস্থা চলছিলই। হাইকোর্টের নির্দেশে নতুন পুরপ্রধান নির্বাচন পিছিয়ে গেল আরও এক মাস।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের গ্রীষ্ম অবকাশকালীন বেঞ্চের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে ওই রায় হয়। গুসকরার পুপ্রধান বুর্ধেন্দু রায়ের অন্যতম আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল বলেন, ‘‘এই নির্দেশের ফলে আগামী ৪ জুন যে পুরপ্রধান নির্বাচন ছিল তা বাতিল হয়ে গেল। আপাতত গুসকরার পুরপ্রধান বুর্ধেন্দুবাবুই রয়ে গেলেন।’’ বিচারপতি এ দিন তাঁর রায়ে আরও জানিয়েছেন, সব পক্ষকেই আদালতে হলফনামা দিতে হবে। একই সঙ্গে হাইকোর্টের গরমের ছুটি শেষ হওয়ার সাত দিনের মধ্যে সাধারণ কোর্টে ফের এই মামলার শুনানি হবে।
মাস খানেক ধরেই গুসকরা পুরসভায় তৃণমূল পুরপ্রধান ও দলেরই বিরোধী গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব চলছিল। মারামারি, লিফলেট বিলি করে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রচার বাদ যায়নি কিছুই। পরে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গত ২৩ মে অনাস্থা বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে পুরপ্রধানকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেন কাউন্সিলরেরা। ৩১ মে নোটিস জারি করে জেলাশাসক জানান, ৪ জুন নতুন পুরপ্রধান নির্বাচন করা হবে।
কিন্তু আইন মেনে বৈঠক হয়নি দাবি করে বুর্ধেন্দু রায় জরুরিকালীন গ্রীষ্ম অবকাশকালীন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। তাঁর আইনজীবীদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্ট ১৯৯৩-এর ১৮ নম্বর ধারা অনুয়ায়ী বিধিবদ্ধ ভাবে ওই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। ওই আইন অনুয়ায়ী গুসকার মতো ১৬ জন কাউন্সিলরের পুরসভায় পুপ্রধানকে অপসারণ করতে অন্তত ন’জনের বৈধ ভোট দরকার ছিল। তবে এ দিন হাইকোর্টে এর পাল্টা হিসেবে সরকারি আইনজীবীরা জানান, ওই আইনেই বলা হয়েছে পুরপ্রধান অপসারণের ক্ষেত্রে যত জন কাউন্সিলর উপস্থিত থাকবেন সেটাই বৈধ বলে গণ্য করা হবে। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতি জানান, আরও শুনানির প্রয়োজন রয়েছে। ওই অনাস্থা বৈঠকের উপর চার সপ্তাহ স্থগিতাদেশের নির্দেশ দেন তিনি। বুর্ধেন্দুবাবুর আইনজীবীর উপরেই সব পক্ষকে জানানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পুরপ্রধান বিরোধী কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রায়ে আমার কিছু আসে যায় না। হাইকোর্টের রায়কে আমি সম্মান করি।’’ জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘হাইকোর্টের রায় আসার পরে এ ব্যাপারে মন্তব্য করব।’’ বুর্ধেন্দুর অনুগামীরা খুশি রায়ে।