কয়েক মাস ঘোরার পরে বকেয়ার দাবিতে আউশগ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে তালা ঝুলিয়ে দিলেন শ্রমিকেরা। তাঁদের দাবি, ব্লকের অনুমতি ছাড়াই একশো দিনের প্রকল্পে মাটি কাটা-সহ বেশ কিছু কাজ করিয়েছে পঞ্চায়েত। কিন্তু কোনও মজুরিই মেটানো হয়নি। বৃহস্পতিবার প্রধানকে ভেতরে রেখে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে কয়েক ঘণ্টা পঞ্চায়েত দফতরের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেন তাঁরা। পরে বেরিয়ে প্রধান সোনামনি মাঝি আউশগ্রাম ১-এর বিডিও চিত্তজিৎ বসুর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন। পরে বিডিও বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের কাছে বকেয়া মজুরির ব্যাপারে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে। একশো দিনের প্রকল্পে শ্রমিকেরা যাতে মজুরি পান, তার জন্য জেলায় যোগাযোগ করছি।’’
ব্লক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, একশো দিনের প্রকল্পে পঞ্চায়েত কী কাজ করতে চায়, তার পরিকল্পনা বিডিও তথা প্রকল্পের নোডাল অফিসারের কাছে পাঠাতে হয়। বিডিও অনুমোদন দেওয়ার পরে কাজে নামে পঞ্চায়েত। কাজ শেষের পরে সুপারভাইজারদের মাস্টাররোল ‘আপলোড’ করতে হয়। তারপর শ্রমিকরা মজুরি পান। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অনুমোদন ছাড়াই কাজ হওয়ার জন্য মাস্টাররোল ‘আপলোড’ও হয়নি। ফলে মাস পেরিয়ে গেলেও শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি। ব্লক অফিসের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘গা-জোয়ারি করে কাজ করানোর জন্যই এই ধরণের সমস্যা হয়েছে। এমনিতেই ১০০ দিনের কাজ না করে টাকা পাওয়ার অভিযোগ ভুরিভুরি। সেখানে আউশগ্রামে উল্টো ঘটনা ঘটল।’’
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, গত বছর মে মাসে মাটি কাটা-সহ বেশ কয়েকটি প্রকল্পে প্রায় ২৫০ জন শ্রমিক কাজ করেন। মাসের পর মাস কেটে গেলেও তিরিশ দিনের মজুরি তাঁরা পান না। এ দিনও প্রধানের কাছে কোনও সদুত্তর না পেয়ে তালা ঝোলানোর সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। সাড়ে ১১টা নাগাদ ৫০-৬০ জন শ্রমিক এসে কর্মীদের বের করে দিয়ে প্রধান ও তাঁর দুই সঙ্গীকে রেখে পঞ্চায়েতের গেটে তালা ঝোলান। স্থানীয় শোকডাঙা গ্রামের কালু সোরেন ও ঝরকাডাঙা গ্রামের সুকল মাড্ডিদের কথায়, ‘‘অনুমোদন ছাড়া কাজ করানো হয়েছে বলে আমাদের বলা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের কী দোষ? আমরা জানবই বা কী করে অনুমোদন ছাড়া কাজ করানো হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে মজুরি না পেলে আন্দোলন চলবে।’’ বিকেলে ব্লক প্রতিনিধিরা গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে বকেয়া মজুরি দ্রুত ফেরানোর আশ্বাস দিলে প্রধান ছাড়া পান। প্রধানের কথায়, ‘‘একটা ভুল হয়েছে। সেটা মেটানোর চেষ্টা করছি।’’