বর্ধমান শহরেও বাড়ছে ডেঙ্গিহানা

সুনেত্রাদেবী যাই দাবি করুণ, ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা যে বর্ধমান শহরে বাড়ছে, তা স্পষ্ট সরকারি পরিসংখ্যানেই। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাও বেড়ে চলেছে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫২
Share:

বর্ধমান শহরের বামবটতলার একটি বেসরকারি হাসপাতাল ডেঙ্গির ১০টি রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ পাঠিয়েছিল। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে সেগুলি ‘নেগেটিভ’ পাওয়া গিয়েছে। এর পরেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে পূর্ব বর্ধমান স্বাস্থ্য দফতর। জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুনেত্রা মজুমদার বলেন, ‘‘এ ভাবে রোগীদের মধ্যে ভীতি তৈরি করলে হলে স্বাস্থ্য দফতর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।’’

Advertisement

সুনেত্রাদেবী যাই দাবি করুণ, ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা যে বর্ধমান শহরে বাড়ছে, তা স্পষ্ট সরকারি পরিসংখ্যানেই। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অগস্টে জেলার ৩২৬ জন রোগীর রক্ত পরীক্ষা করে ১৩ জনের ডেঙ্গি ‘পজিটিভ’ মিলেছিল। সেপ্টেম্বরে ৫১১ জনের মধ্যে ডেঙ্গি ‘পজিটিভ’ মিলেছে ৮০ জনের। এই তথ্য মিলেছে অ্যালাইজা পরীক্ষায়। চলতি মাসে সেই সংখ্যাটা একশোর কাছাকাছি পৌঁছেছে। পুরসভা সূত্রের খবর, গত মাসে ৮০ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মধ্যে ৩০ জনই বর্ধমান শহরের বাসিন্দা। শহরের কাঁটাপুকুরের এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুও হয়েছে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে। পরিবারের দাবি, কলকাতার সরকারি হাসপাতালের পরীক্ষাতেই মৃতের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল।

পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের অবশ্য দাবি, এখনই আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে ডেঙ্গি মোকাবিলায় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। রবিবার বর্ধমান মেডিক্যাল ও নানা নার্সিংহোমে জ্বর নিয়ে মোট ৮৭ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দশ জনের ডেঙ্গি ‘পজিটিভ’ বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ বলেন, ‘‘আমরা ২৪ ঘণ্টার নজরদারি দল রেখেছি, যাতে অ্যালাইজা টেস্ট করে দ্রুত রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব হয়।’’

Advertisement

এরই মধ্যে বিভিন্ন ল্যাব ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে স্রেফ এনএস-১ ‘র‌্যাপিড টেস্ট’ করে ডেঙ্গির রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ লিখতে কার্যত নিষেধ করে দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বর্ধমানের পুর-পারিষদ (স্বাস্থ্য) অরূপ দাসের দাবি, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই।
বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলি অযথা ভয় দেখাচ্ছে। পুরসভা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।’’ পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের বাড়ি-বাড়ি ঘুরে জ্বরে আক্রান্তদের খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্লেটলেটের চাহিদাও বাড়তে শুরু করেছে। সুনেত্রাদেবী অবশ্য বলেন, ‘‘বর্ধমান মেডিক্যালে প্লেটলেট রয়েছে। তবে ২০ হাজারের নীচে না নামলে রোগীকে প্লেটলেট দেওয়া অবৈজ্ঞানিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন