শিশুর পেটে পাওয়া গেল ২০৩টি কুলবীজ!

চার বছরের শিশুর পেট থেকে বেরোল ২০৩টি কুলের আঁটি। পেটের ভিতর ছিল ধাতব নাটবল্টুও। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০০:৫৩
Share:

হাসপাতালে জীবন। নিজস্ব চিত্র

চার বছরের শিশুর পেট থেকে বেরোল ২০৩টি কুলের আঁটি। পেটের ভিতর ছিল ধাতব নাটবল্টুও।

Advertisement

শনিবার সকালে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে অস্ত্রোপচার করে এমনই কাণ্ড দেখেন আট সদস্যের চিকিৎসক দল। অস্ত্রোপচারের পর বেশ খানিকটা সময় কেটে যাওয়ার পরেও বিস্ময় কাটেনি ওই দলের প্রধান নরেন মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, “অবাক কান্ড! বারবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেও পেটের ভিতর যে কুলের বীজ রয়েছে তা বুঝতে পারিনি। ভেবেছিলাম চুল-সুতো, মাটি থাকতে পারে।’’ হাসপাতাল সুপার উৎপল দাঁ বলেন, “মাটি-চুল পেট থেকে পাওয়া গিয়েছে আগে। কিন্তু এতগুলো কুলের আঁটি পাওয়াটা অস্বাভাবিক।’’ মাস দু’য়েক আগে এই হাসপাতালেই এক যুবকের পেট থেকে জমাট বাঁধা সিমেন্ট বের করেছিলেন চিকিৎসকেরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ অগস্ট চার বছরের ছেলে জীবনকে নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে এসে হাজির হন হুগলি জেলার গোঘাট থানার শ্যামবাজারের বাসিন্দা অজয় রুইদাস ও কল্পনা রুইদাস। পেশায় খেতমজুর ওই দম্পতি জানান, এক বছর ধরে পেটে ব্যথা কমছেই না ছেলের। এতদিন গ্যাস-অম্বলের ব্যথা মনে করে নানা রকম ওষুধ খাইয়েছেন তাঁরা, নিয়ে গিয়েছেন ব্লক, মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু তাতেও রোগ ধরতে পারেননি চিকিৎসকেরা। দম্পতির দাবি, মাস দু’য়েক আগে ফের চিকিৎসকের কাছে গেলে, তাঁরা জানান জীবনের ডান দিকে পেটের নীচে কিছু রয়েছে। জায়গাটি ফুলে রয়েছে। হাত দিলে ভেচরে শক্ত কিছু আছে বোঝা যাচ্ছে। ওই চিকিৎসকেরা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সপ্তাহ দু’য়েক আগে ফের পেটের ব্যথায় ছেলে কাতরাতে শুরু করলে তাঁরা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন।

Advertisement

হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে শিশু বিভাগে চিকিৎসা করানোর পরেই ওই দম্পতিকে জানিয়ে দেওয়া হয়, অস্ত্রোপচার করে পেটের ভিতর থাকা দ্রব্য বের করতে হবে। ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয় শিশুটিকে। এ দিন প্রায় একঘন্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে শিশুটির পেট থেকে কুলের আঁটি ছাড়াও ধাতব বল্টু, খেজুরের আঁটি ও বেশ কিছুটা সুতো পান চিকিৎসকরা। ওই দলে থাকা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মধুসূদন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বড়দের ক্ষেত্রে এই অস্ত্রোপচার খুবই সাধারণ। কিন্তু চার বছরের শিশুর ক্ষেত্রে তা জটিল হয়ে দাঁড়ায়।’’ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ক্ষুদ্রান্তের শেষে আর বৃহদান্ত্রের শুরুর মুখে কুলের বীজগুলি আটকে ছিল।

কিন্তু এতগুলো কুলের বীজ পেটে গেল কী ভাবে? শিশুটির বাবা-মা বলেন, “আমরা কাজের জন্য সকালেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতাম। দশ বছরের মেয়ে টুম্পার কাছে থাকত জীবন। সম্ভবত তখনই মাটিতে যা পড়ে থাকত তাই তুলে খেয়ে ফেলেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন