—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
প্রায় এক মাস ধরে পূর্ব বর্ধমানের-১ ব্লকের একাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশু, গর্ভবতী মহিলা এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য রান্না বন্ধ রয়েছে। ভাত, ডাল, সব্জি কিংবা খিচুড়ি কিছুই দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। হঠাৎ করেই খাবার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়েরা। এই ঘটনায় প্রশাসনকে এক হাত নিয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির দাবি, জেলা বা ব্লক প্রশাসন এখন ব্যস্ত এসআইআরে কী করে জালি ভোটার ঢোকানো যায়। তা-ই তাঁদের এ সব দেখার সময় নেই।
জানা গিয়েছে, ভিটা, শোনপুর, তেঁতুলিয়া, বারাসতী, মিরেরডাঙা, দাসপুর, কলিগ্রাম-সহ প্রায় প্রতিটি গ্রামে একই পরিস্থিতি। কেন্দ্রগুলির দায়িত্বে থাকা অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী শ্যামলী ওঝা জানিয়েছেন, সরকারি চাল না পাওয়ায় তাঁদের পক্ষে খাবার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয় নন্দিতা মাঝি বলেন, “সরকারের নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজকল্যাণ দফতরের অধীন পরিচালিত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে দীর্ঘ সময় ধরে কেন খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ বন্ধ, তা বোধগম্য হচ্ছে না।”
এলাকার মানুষজনের কথায়, কারণ যাই থাকুক, সরকারি প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও গরিব পরিবারগুলির শিশু, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের পুষ্টির ঘাটতি হচ্ছে। এর দায় কে নেবে?
অন্য দিকে, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বক্তব্য, কেন্দ্রগুলিতে চাল যে শেষ হয়ে গিয়েছে, তা তাঁরা বহুবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। স্টক রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। অভিভাবকেরাও প্রতি দিন এসে প্রশ্ন করছেন কেন খাবার দেওয়া হচ্ছে না। সেটাও জানানো হয়েছে। কিন্তু চাল আসে না, তা-ই রান্না করে খাবার দেওয়ার কোনও উপায় নেই। তাঁরা আরও জানান, এই পরিস্থিতিতে কিছু দিন গোটা ডিম এবং কিছু দিন অর্ধেক ডিম দিয়ে কোনও ভাবে ব্যবস্থা চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
দীর্ঘ দিন ধরে রান্না বন্ধ থাকার ফলে শিশুদের পুষ্টি এবং গর্ভবতী নারীদের খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। স্থানীয়রা দ্রুত খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন একাংশ। এই বিষয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, “আমি খবর পেয়ে ডিপিওকে জানিয়েছি। কী সমস্যা তা জেনে দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ রকম তো হওয়ার কথা নয়।” আজকালের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে শ্যামাপ্রসন্ন আশ্বাস দেন।
অন্য দিকে, বিজেপি নেতা মৃত্যঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “আসলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সব সমস্যা সমাধানের কোন উদ্যোগ নেই। সবাই এখন শাসকদল তৃণমূলকে কী করে ২০২৬-এর বিধানসভা ভোটে জেতানো যায়, তা-ই নিয়ে ব্যস্ত।”