Forest Fire

বার বার কেন পুড়ছে বন, নালিশ দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যের

দফতর সূত্রে জানা যায়, বছর দেড়েক আগে বারাবনির পানুড়িয়া ব্লকের হুসেনপুরে প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে বনাঞ্চল গড়ে তোলা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:২৭
Share:

বারাবনির পানুড়িয়াতে চলছে আগুন নেভানোর কাজ। নিজস্ব চিত্র

বহু বারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিম বর্ধমানের দূষণ রোধে বৃক্ষরোপণ-সহ বনাঞ্চল তৈরির বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, এমনই জানা গিয়েছে জেলা প্রশাসন, বন দফতর, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি পূর্ব বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠকেও পশ্চিম বর্ধমানে তৈরি হওয়া বনাঞ্চলের বিষয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে বন দফতর, এমনই খবর সূত্রের। কিন্তু তার কিছু দিন আগে বারাবনির পানুড়িয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকায় বনাঞ্চল পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। বন দফতরের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ: এই কাজ ‘দুষ্কৃতীদেরই’। ঘটনাচক্রে, এর আগে বেশ কয়কে বার বনাঞ্চলে দুষ্কৃতী-তাণ্ডব দেখা গিয়েছে। বার বার এমন হচ্ছে কেন, কী করছে প্রশাসন, উঠেছে প্রশ্ন।

Advertisement

বন দফতরের ডিএফও (দুর্গাপুর) ডিএফও বুদ্ধদেব মণ্ডল সোমবার বলেন, “প্রায় তিন হেক্টর জমি জুড়ে থাকা প্রায় সাড়ে চার হাজার গাছ পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।” কী ভাবে আগুন ধরেছিল? বুদ্ধদেবের বক্তব্য, “এটা দুষ্কৃতীদের কাজ। পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি। আমরাও আলাদা ভাবে তদন্ত করছি।”

দফতর সূত্রে জানা যায়, বছর দেড়েক আগে বারাবনির পানুড়িয়া ব্লকের হুসেনপুরে প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে বনাঞ্চল গড়ে তোলা হয়। এখানে প্রচুর সংখ্যায় শাল, সেগুন ও সোনাঝুরি গাছ লাগানো হয়। সেই বনাঞ্চলেই রবিবার বিকেলে আগুন ধরানো হয় বলে অভিযোগ। বনকর্মীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে, কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে। অথচ, বারাবনির মতো রুক্ষভূমিতে দেড় বছর ধরে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাছগুলিকে বাঁচিয়ে বড় করে তোলা হয়।

Advertisement

সোমবার দুপুরেও অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় কয়েক জনের বিষয়টি নজরে পড়ে। তাঁরাই আগুন নেভান। বন দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, জেলার নানা প্রান্তে বনাঞ্চলে এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বারাবনি ব্লক। গত কয়েক বছরে দিঘলপাহাড়ি, পানুড়িয়া জঙ্গল, হুসেনপুর, মেঝানডিহি, অলিগঞ্জ এলাকায় তা চরম আকার ধারণ করেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, ২০১৯ থেকে ২০২১-এর মধ্যে শুধুমাত্র পানুড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় চারটি বনাঞ্চলে মোট ৩০ বার অগ্নি-সংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

কিন্তু কেন ‘ঘটানো হচ্ছে’ বার বার এমনটা? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন বাসিন্দা জানাচ্ছেন, জ্বালানির জন্য কাঠ সংগ্রহ এবং কাঠ পাচারের জন্যই এমনটা করা হচ্ছে। বিষয়টি স্বীকার করছেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বজিৎ সিংহও। তাঁর কথায়, “পানুড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকায় বার বার বনে আগুন ধরানো হচ্ছে। এটা আসলে কিছু দুষ্কৃতীর কাজ।”

এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, দুষ্কৃতী তাণ্ডব রোখা যাচ্ছে না কেন? বন দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, তাঁদের হাতে পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মী নেই। ফলে, বিস্তীর্ণ বন-এলাকায় নজরদারি চালানো সম্ভব হয় না। এ বিষয়ে তাঁরা স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং নাগরিকদের উপরে ভরসা রাখছেন। বিষয়টি নিয়ে তাঁরাও ভাবনাচিন্তা করছেন বলে জানান পঞ্চায়েত স্তরের নপ্রতিনিধিরা। পাশাপাশি, পুলিশও বিষয়টি নিয়ে নজরদারি এবং তদন্ত চালানোর কথা জানিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement