প্রতীকী ছবি।
প্রতিটি প্রশাসনিক সভায় নিয়ম করে ‘কাটমানি’ নিয়ে সরব হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। দিদির কথা মেনে আগেভাগেই লিফলেট বিলি করে ‘বাংলা আবাস যোজনা’র উপভোক্তারা যেন কাউকে ‘কাটমানি’ না দেন বলে জানিয়ে দিল ভাতার পঞ্চায়েত সমিতি। শুধু লিফলেট বিলি নয়, গ্রামে গ্রামে রীতিমতো সভা করেও প্রচার চালাচ্ছে পঞ্চায়েত সমিতি। কেউ ‘কাটমানি’ বা ‘কমিশন’ চাইলে উপভোক্তাদের থানায় অভিযোগ করতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী আধিকারিক তথা বিডিও প্রলয় মণ্ডল বলেন, “সরকারি প্রকল্প নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। যাতে সচেতন থেকে যথাসময়ে বাড়ির কাজ শেষ করতে পারেন উপভোক্তা।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা পরিষদ ২৩টি ব্লকে বাংলা আবাস যোজনায় প্রায় ৩১ হাজার বাড়ি তৈরির অনুমোদন পেয়েছে। তার মধ্যে ভাতার ব্লকে হবে ১৪৯৪টি বাড়ি। জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “গরিব মানুষ যাতে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে বিভ্রান্ত না হন, তার জন্য এই প্রচেষ্টা। ভাতারের মতো অন্য পঞ্চায়েত সমিতিগুলিও প্রচার করার জন্য বলা হবে।”
ভাতারে ওই প্রচারপত্রে জানানো হয়েছে, ‘উপভোক্তাদের কোনও কাজের জন্যই পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজের সঙ্গে যুক্ত বা অন্য কাউকে সরকারি প্রকল্পের গৃহ নির্মাণের জন্য টাকা দিতে হবে না। সমস্ত কাজ সরকার নির্দেশিত নিয়মাবলী অনুযায়ী বিনা ব্যয়ে তৈরি হবে। এই প্রকল্পের জন্য কোনও অসাধু ব্যাক্তি টাকা চাইলে গ্রাম পঞ্চায়েত, বিডিও দফতর কিংবা থানায় লিখিত ভাবে জানান’। ব্লক দফতর সূত্রে জানা যায়, উপভোক্তারা বাড়ি তৈরির জন্য চারটে কিস্তিতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ও মজুরি বাবদ ১০০ দিনের কাজ থেকে তিনটে কিস্তিতে ৯০ দিনের বেতন পাবেন। ওই বাড়ি তৈরি নিয়ে উপভোক্তাদের কাছ থেকে কমিশন নেওয়া হচ্ছে বলে মৌখিক ভাবে অভিযোগ পান কর্তারা। খোঁজ নিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, ব্যাঙ্ক থেকেই প্রথম কিস্তির টাকা ‘কমিশন’ বাবদ দিতে বাধ্য হচ্ছেন উপভোক্তারা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ওই টাকা শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের দিতে হচ্ছে বলেও স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন।
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কমিশন বা কাটমানি নিয়ে সরব। আমরাও চাই না, কোনও উপভোক্তাকে সরকারি প্রকল্পের জন্য কাউকে টাকা দিক। প্রশাসনের এই উদ্যোগের আমরা খুশি।”