ডিসেম্বরের মাঝামাঝি নাটকে মেতে ওঠা ছ’বছর ধরে কাটোয়ার অভ্যেস। বাইরে থেকে একাধিক নাটকের দল আসে, স্থানীয়রাও নাটক করেন। তবে এ বার নোট বাতিলের বাজারে চেনা ছবিটা বদলেছে কিছুটা। টিকিটের দাম এক থাকলেও দর্শক কমেছে বেশ খানিকটা। বিজ্ঞাপনও মিলেছে অন্য বারের থেকে কম।
ছ’বছর আগে ‘কৃষ্টি সংসদ’ আর ‘জাগরী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী’ আলাদা ভাবে শুরু করে নাট্যোৎসব। এ বার শীতের শুরুতেই তিন দিনের উৎসব আয়োজন করেছিল ‘জাগরী’। তবে নোট-বাতিলের কোপ সে মঞ্চেও পড়েছে বলে উদ্যোক্তাদের দাবি।
শুক্রবার, উৎসবের প্রথম দিন হালিশহরের ‘ইউনিটি মালঞ্চ’ প্রযোজনা করে ‘ঘুম ভাঙার গান’ ও ‘দানো’ নামে দু’টি নাটক। শনিবার মঞ্চে বাংলার ‘বহুবিবাহ’ প্রথাই যেন আরও একবার ফিরে এল ‘হযবরল’-র প্রযোজনার মাধ্যমে। তাদের প্রযোজিত এবং চন্দন সেনের লেখা ‘ভামকীর্তন’ নাটকে দেখানো হয়েছে এক কিশোরী, গ্রামবাসী ও ‘ভামে’র প্রবৃত্তিগত টানাপড়েন। রবিবার কাটোয়ার সংহতি মঞ্চে ‘বালিগঞ্জ ব্রাত্যজন’ পরিবেশন করেছে নাটক ‘কমলা’। বিজয় তেন্ডুলকারের মূল লেখা অবলম্বনে এখানেও মঞ্চে ভারতবর্ষে নারী বিক্রি, নারীর অবস্থার এক করুণ ছবি দেখানো হয়েছে।
তবে নাট্যোৎসবের আয়োজন করতে গিয়ে এ বার সমস্যা হয়েছে বলে জানান ‘জাগরী’র সম্পাদক অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘নোট বাতিলের চোটে বিজ্ঞাপন কম মিলেছে। বাইরের থেকে আসা নাটকের দলগুলির টাকা কী ভাবে মেটাব, তা নিয়েও চিন্তায় রয়েছে।’’ নোট-বাতিলের কোপ পড়েছে দর্শকের সংখ্যাতেও। উদ্যোক্তাদের তরফে জানা গিয়েছে, এ বার টিকিটের দাম ছিল ১২৫ ও ১৭৫ টাকা। অন্যান্য বারের তুলনায় এ বার দর্শকের সংখ্যা প্রায় ৪০০ জন কম বলে উদ্যোক্তারা জানান। এর পরেও তুষার দে নামে এক দর্শক বলেন, ‘‘নোটে টান পড়েছে। তবুও নাটক দেখার সুযোগটা হারাতে চাইনি।’’