শুকিয়েছে নলকূপ, জল পেতে জেরবার পডুয়ারা

পর্যাপ্ত জল না মেলায় বিপাকে পড়েছে দুর্গাপুরের আদিবাসী আবাসিক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। নলকূপ অকেজো। পুরসভার সরবরাহ করা জলে চাহিদা মেটে না। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওযার দাবি জানিয়েছে পড়ুয়ারা। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘স্কুলে নানা সমস্যা রয়েছে। তবে গরম পড়তেই যে ভাবে জলের কষ্ট শুরু হয়েছে তা বেশ দুশ্চিন্তার।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৪৭
Share:

নলকূপ রয়েছে, কিন্তু জল পড়ে না।—নিজস্ব চিত্র।

পর্যাপ্ত জল না মেলায় বিপাকে পড়েছে দুর্গাপুরের আদিবাসী আবাসিক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা।

Advertisement

নলকূপ অকেজো। পুরসভার সরবরাহ করা জলে চাহিদা মেটে না। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওযার দাবি জানিয়েছে পড়ুয়ারা। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘স্কুলে নানা সমস্যা রয়েছে। তবে গরম পড়তেই যে ভাবে জলের কষ্ট শুরু হয়েছে তা বেশ দুশ্চিন্তার।’’

রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর দুর্গাপুরে ‘পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক বিদ্যালয়’ গড়ে তোলে ২০০৫ সালে। শ’খানেক পড়ুয়া নিয়ে অস্থায়ী ঠিকানায় প্রথমে শুরু হয় পঠনপাঠন। একটি বেসরকারি কারখানার অব্যবহৃত কিছু আবাসন ভাড়া নিয়ে চালু হয় হস্টেল। ২০১৪ সালে ফুলঝোড়ের কাছে হরিবাজারে নতুন ভবনে উঠে যায় স্কুল। স্কুল লাগোয়া হস্টেলে থাকে স্কুলের প্রায় সাড়ে চারশো ছাত্রছাত্রী। শুধু বর্ধমান জেলা নয়, পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির এই পড়ুয়ারা এসেছে আদিবাসী অধ্যুষিত পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর ইত্যাদি জেলা থেকেও। কিন্তু নানা সমস্যায় জেরবার স্কুলের পড়ুয়ারা।

Advertisement

পড়ুয়াদের অভিযোগ, স্কুলে সীমানা পাঁচিল না থাকায় নিরাপত্তা নিয়ে ভয় রয়েছে। সাফাইকর্মী না থাকায় চার দিক অপরিষ্কার হয়ে থাকে। সময়ে খাবার মেলে না। কিন্তু গরম পড়ার পরে সে সব ছাপিয়ে প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জলের অপ্রতুলতা। পড়ুয়ারা জানায়, শুধু পানীয় জল নয়, স্নানের জলও ঠিক মতো করা যায় না। শৌচাগারে পর্যাপ্ত জল মেলে না। তাদের দাবি, স্কুল কর্তৃপক্ষকে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে বেশ কয়েক বার। কিন্তু পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। অভিভাবক গৌরচন্দ্র হেমব্রম, সরস্বতী হাঁসদা, সুরজমনি সরেনরা বলেন, ‘‘আমাদের ছেলেমেয়েরা বেশ কষ্টে রয়েছে। নানা সমস্যায় জর্জরিত এই স্কুল ও হস্টেল। গরমে পর্যাপ্ত জলটুকুও মেলে না। বহু আশা নিয়ে ওদের এখানে ভর্তি করেছি। কিন্তু এমন পরিস্থিতি দীর্ঘদিন চললে ছেলেমেয়েদের অন্য স্কুলে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবতে হবে।’’

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি নলকূপ আছে। কিন্তু সেটি অকেজো হয়ে গিয়েছে। ফলে, একমাত্র পুরসভার জলই ভরসা। ছাদে ট্যাঙ্কে পুরসভার জল এসে জমে। তার পরে তা পাইপলাইনের মাধ্যমে পৌঁছে যায় স্কুল ও হস্টেলে। কিন্তু পুরসভা থেকে যে পরিমাণ জল আসে তা যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন স্কুলের শিক্ষকেরা। জল নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে বিবাদ লেগেই থাকে বলে স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জয়ন্তবাবু বলেন, ‘‘স্কুল ও হস্টেলে জল সমস্যার কথা জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট জায়গায়।’’

এই স্কুলটির পরিচালন সমিতির সভাপতি মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত। তাঁর আশ্বাস, বিকল্প হিসেবে স্কুলের দু’টি হস্টেলে দু’টি আলাদা কুয়ো খোঁড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চলতি মাসেই সেই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানান তিনি। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘এমনিতে যা জল আসবে তার সঙ্গে কুয়ো থেকে জল তুলে নিলে পড়ুয়াদের অভাব অনেকটাই মিটবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন