Durga idol

তরুণ শিল্পী শঙ্কুর ৬০ কেজির দুর্গা পাড়ি দিচ্ছে আমেরিকা, তৈরি হয়েছে ফাইবার আর কাঠ দিয়ে

তাপস দে নামে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে এই প্রথম দুর্গাপ্রতিমা তৈরির বরাত পান শঙ্কু। তার কিছু দিন পর কোরিয়া থেকেও দুর্গাপ্রতিমা তৈরির অনুরোধ আসে। কিন্তু হাতে সময় না থাকায় সেই বরাত তিনি নিতে পারেননি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:০২
Share:

শেষ মুহূর্তের তুলির টান দিচ্ছেন শিল্পী শঙ্কু। —নিজস্ব চিত্র।

মাটি দিয়ে প্রতিমা গড়েননি পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাট থানার জাহান্নগর পঞ্চায়েতের মাগনপুর গ্রামের শিল্পী শঙ্কু দেবনাথ। তরুণ এই শিল্পীর হাতে তৈরি ফাইবার এবং কাঠের দুর্গাপ্রতিমা পাড়ি দেবে আমেরিকায়। বিদেশে পাড়ি দেওয়ার আগে নজরকাড়া প্রতিমাটি এক বার দেখার জন্য ভিড় উপচে পড়ছে শিল্পীর বাড়িতে।

Advertisement

অল্প বয়সেই তাঁর শৈল্পিক দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন শঙ্কু। তিনি কাজ শিখেছেন কৃষ্ণনগরে। মূলত সিমেন্ট, ফাইবার, পাথর এবং পিতল দিয়ে শিল্পকর্ম করেন ওই শিল্পী। তাঁর তৈরি বিভিন্ন মূর্তি এর আগেও শিল্পমহলে সমাদৃত হয়েছে। তবে ২৪ বছর বয়সি শিল্পী এ বারই প্রথম দুর্গামূর্তি তৈরির বরাত পেয়েছেন। তা-ও আবার সূদূর আমেরিকা থেকে। তিনি জানান, বরাত আসে মাত্র দু’মাস আগে। সময় কম বলে দিনরাত এক করে পরিশ্রম করেছেন। প্রতিমা তৈরির কাজও প্রায় শেষ। এখন শেষ মুহূর্তের তুলির টান দিচ্ছেন তিনি। শঙ্কু বলেন, ‘‘আগামী বুধবার বিমানে দুর্গাপ্রতিমা পাড়ি দেবে আমেরিকা।’’

তাপস দে নামে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে এই প্রথম দুর্গাপ্রতিমা তৈরির বরাত পান শঙ্কু। তার কিছু দিন পর কোরিয়া থেকেও দুর্গাপ্রতিমা তৈরির অনুরোধ আসে। কিন্তু হাতে সময় না থাকায় সেই বরাত তিনি নিতে পারেননি। শঙ্কু বলেন, ‘‘আমেরিকার জন্য যে দুর্গাপ্রতিমাটি তৈরি করেছি, সেটি লম্বায় সাড়ে তিন ফুট। চওড়ায় চার ফুট। কাঠের পাটাতনের উপর ফাইবার দিয়ে বাহন-সহ দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ এবং অসুর মূর্তি নানা কারুকাজে সাজিয়ে তুলেছি।’’ শিল্পী দেবদেবীকে সাজাতে ব্যবহার করেছেন নানা রঙের পাথর এবং নকল সোনার গয়না। সব মিলিয়ে প্রতিমার ওজন ৬০ কেজির মতো। খুব তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে হবে। তাই শঙ্কুকে তাঁর বাবা মদন দেবনাথ, মা প্রণতি দেবনাথ এবং বোন পায়েলও সহযোগিতা করেছেন। সেই কারণে দু’মাসের মধ্যে তিনি প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করতে পেরেছেন বলে জানান। শঙ্কু জানান, কাজটির জন্য তিনি পাচ্ছেন ৪ লক্ষ টাকা।

Advertisement

শঙ্কুর বাবা মদন বলেন, ‘‘এই প্রথম বার ছেলের তৈরি প্রতিমা বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে। খুব আনন্দ হচ্ছে। গর্ব অনুভব করছি।’’ যে প্রতিবেশীর মাধ্যমে শঙ্কু এই বরাত পেয়েছিলেন সেই তাপস বলেন, ‘‘আমার বন্ধু অনিমেষ রায় স্বরূপগঞ্জের বাসিন্দা হলেও দেড় দশক ধরে সপরিবারে আমেরিকায় থাকে। ওখানে বন্ধুর গাড়ির ব্যবসা। এ বছর ওরা দুর্গাপুজো করার ব্যাপারে মনস্থির করেছে। প্রতিমা তৈরির জন্য শিল্পীর খোঁজ চাইছিল। তখন আমি শঙ্কুর কথা বলি। তার পর বন্ধুই শঙ্কুকে ফোন করে দুর্গাপ্রতিমা তৈরির কথা বলে।’’ নাদনঘাটের তরুণ শিল্পীর হাতে গড়া দুর্গা সুদূর আমেরিকা যাচ্ছে, এটা জেনেই আনন্দিত গোটা গ্রাম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement