পরপর দু’দিন ভূমিকম্পের জেরে সতর্কতা জারি করেছে ইসিএল। খনিতে শ্রমিকেরা নামার আগে ভাল করে খনির চাল ও দেওয়াল পরীক্ষা করে নিতে বলা হয়েছে বলে ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান। শহরের নিরাপত্তা নিয়েও বাড়িতে সতর্কতা নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
শনিবারের মতো রবিবারও ভূকম্পন অনুভূত হওয়ায় আতঙ্কিত মানুষজন রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। নিমেষে খালি হয়ে যায় শপিংমল ও আবাসনগুলি। তবে কম্পন বেশিক্ষণ স্থায়ী না হওয়ায় কিছুক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু চাপা আতঙ্ক রয়েই গিয়েছে। শনিবার কাঁকসার গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি পুরনো ভবনের কার্নিসের একাংশ ভূমিকম্পের ফলে ভেঙে গিয়েছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান। ভূমিকম্পের সময়ে স্কুলে এ নিয়ে আতঙ্কও ছড়ায়। পরে স্কুলে আগাম ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। কাঁকসার আমলাজোড়া স্কুলে প্রায় দশ জন পড়ুয়া আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল বলে কর্তৃপক্ষ জানান। পরে তাদের কাঁকসা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। রবিবার দুপুরে রানিগঞ্জ বাজার ও রামবাগান এলাকায় দু’টি বাড়িতে ফাটল ধরে গিয়েছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
পরপর ভূমিকম্প হওয়ায় শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসন সতর্কতা নিয়েছে বলে জানান আসানসোলের মহকুমাসাসক অমিতাভ দাস। তিনি জানান, শহরে যে বিপর্যয় মোকাবিলা দল রয়েছে তার সদস্যেরা তৈরি রয়েছেন। সম্প্রতি ওই দলের সদস্যেরা আধুনিক সরঞ্জাম নিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেছেন। মহকুমাশাসক জানান, এর আগেও এই দলের সদস্যেরা আসানসোলের একাধিক বিপর্যয়ে উদ্ধারকাজ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সে রকম পরিস্থিতি হলে দ্রুত দলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছবে।’’
সতর্কতা জারি করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএলও। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রত্যেকটি খনি কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শ্রমিকদের কাজে নামানোর আগে ভালো করে খনির চাল ও দেওয়াল দেখে নিতে হবে, কোথাও কোনও ফাটল আছে কি না। শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যেন তাঁদের কাজে পাঠানো হয়। সে রকম পরিস্থিতি তৈরি হলে খনিগর্ভ থেকে শ্রমিকদের তড়িঘড়ি তুলে নেওয়া যেতে পারে, সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। শনি ও রবিবার ভূকম্পন হওয়ার পরেই খনিগর্ভ ভাল ভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে বলে খনির আধিকারিকেরা জানান। ইসিএলর সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়ের আশ্বাস, ‘‘আমরা পুরো বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে নজরে রেখেছি। চিন্তার কিছু নেই।’’