ভূমিকম্পে ফাটল

আতঙ্কে বন্ধ বহু ক্লাস, স্কুলের ভরসা গাছতলা

ভূমিকম্পের ধাক্কা এসে লাগল স্কুলের পঠনপাঠনেও। মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের জেরে কাটোয়া মহকুমার একাধিক স্কুলে ফাটল দেখা দিয়েছে। যার জেরে কোথাও ক্লাস বন্ধ হয়েছে, তো কোথাও গাছতলায় স্কুল চলছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, মহকুমা প্রশাসন থেকে শিক্ষা দফতর সব জায়গায় বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠিয়েছেন তারা। কাটোয়া ২ ব্লকের ইসলামপুর জিএন বালো উচ্চবিদ্যালয়ের প্রতিটি ঘরেই ফাটল ধরেছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় ব্লক অফিসে রিপোর্ট করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৫ ০১:৫১
Share:

ভূমিকম্পের পর থেকে গাছতলাতেই ক্লাস কাটোয়ায়। নিজস্ব চিত্র।

ভূমিকম্পের ধাক্কা এসে লাগল স্কুলের পঠনপাঠনেও।
মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের জেরে কাটোয়া মহকুমার একাধিক স্কুলে ফাটল দেখা দিয়েছে। যার জেরে কোথাও ক্লাস বন্ধ হয়েছে, তো কোথাও গাছতলায় স্কুল চলছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, মহকুমা প্রশাসন থেকে শিক্ষা দফতর সব জায়গায় বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠিয়েছেন তারা।
কাটোয়া ২ ব্লকের ইসলামপুর জিএন বালো উচ্চবিদ্যালয়ের প্রতিটি ঘরেই ফাটল ধরেছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় ব্লক অফিসে রিপোর্ট করেছেন। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে বুধবার বাস্তুকারদের একটি দল স্কুল ঘুরে দেখেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রামজীবন হাজরা বলেন, “আমাদের স্কুলের পুরনো ভবনের অবস্থা বেশ খারাপ। ভূমিকম্পে দেওয়ালের গায়ে চিড় ধরেছে। বাস্তুকাররা ওই ভবনে ক্লাস না করার জন্য পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন।” স্কুল সূত্রে জানা যায়, ওই পুরনো ভবনে সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির পড়ুয়ারা বসত। বাস্তুকারদের পরামর্শ মতো নতুন ভবনে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের আপাতত ছুটি দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক বলেন, “বিপজ্জনক ঘরে পড়ানো বন্ধ রাখতে বলেছেন বাস্তুকাররা। স্কুলে ঘর কম থাকায় নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের ছুটি দিতে বাধ্য হয়েছি।” ওই ব্লকের সিঙ্গী বালিকা বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি ঘরেও বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। বাস্তুকারেরা ওই ঘরগুলিতে ক্লাস বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন। স্থানীয় বিডিও শিবাশিস সরকার বলেন, “সিঙ্গীর ওই স্কুলে একএকটি ঘরের দেওয়ালে তিন-চার ইঞ্চি ফাটল দেখা দিয়েছে। ইসলামপুরে স্কুলটিতেও ফাটল দেখা দিয়েছে। আপাতত ঘরগুলি ব্যবহার করতে বারণ করা হয়েছে। শিক্ষা দফতরে রিপোর্ট করছি আমরা।”

Advertisement

কাটোয়া ১ ব্লকের গোয়াই গ্রামের একটি প্রাথমিক স্কুলেও ফাটল দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার গাছতলায় স্কুল করিয়েছেন শিক্ষকরা। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত ঘোষাল বলেন, “ঘরের অবস্থা খুবই খারাপ। যে কোনও সময় চাঙর খসে ড়ুয়াদের মাথায় পড়তে পারে। ফলে বৃহস্পতিবার স্কুলের সামনে গাছতলায় চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়ানো হয়েছে।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে ভূমিকম্পের জেরেই চতুর্থ শ্রেণির ঘরে ফাটল ধরে। বুধবার সকালে স্কুলে এসে শিক্ষকেরা ঘরের বিপজ্জনক অবস্থা দেখেন। বিপদের আশঙ্কায় সে দিন ছুটিও দিয়ে দেন শিক্ষকেরা। তবে বৃহস্পতিবার আর ছুটি না দিয়ে স্কুলের সামনের গাছতলায় চতুর্থ শ্রেণির ৩১ জন ছাত্রকে নিয়ে পড়াতে বসে যান শিক্ষকরা। এই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আশিষ ঠাকুর, রত্না চট্টোপাধ্যায়রা বলেন, “আমাদের স্কুলে তিনটে ঘরে চারটে ক্লাস হয়। এখন এই পরিস্থতিতে গাছ তলায় পড়ানো ছাড়া উপায় কী?” স্কুল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই পুরো বিষয়টি স্কুল পরিদর্শককে জানিয়েছেন।

মঙ্গলকোটের আয়মাপাড়া, চাকুলিয়া-সহ বেশ কয়েকটি স্কুলেও একাধিক ঘরের ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জেলা সর্বশিক্ষা অভিযানের প্রকল্প আধিকারিক ভাস্কর পাল বলেন, “এখনও পর্যন্ত ভূমিকম্পের ফলে পাঁচটি স্কুলের ঘরে ক্ষতি হয়েছে বলে রিপোর্ট এসেছে। আরও বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন